বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাবুনগরীর দাফন নিয়ে টানাটানি

  •    
  • ১৯ আগস্ট, ২০২১ ২১:০৩

মরদেহ হাটহাজারীতে নেয়ার আগে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে বাবুনগরীর মামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত ৪ আগস্ট তিনি আমার কাছে তার বাবা-মার কবরের পাশে জায়গা চেয়েছেন। আমি তাকে তার বাবা-মার পাশে কবর দেয়া হবে বলেছি।’ আর হেফাজত থেকে বলা হয়েছে তাদের আমিরের দাফন হবে হাটহাজারী মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে।

হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর দাফন নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে। বাবুনগরীর জন্মস্থান বাবুনগরবাসী চান সেখানেই তার দাফন হবে। আর হেফাজত থেকে আগেই জানানো হয়েছে, আমিরের দাফন হবে হাটহাজারী মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী হাটহাজারী মাদ্রাসায় দাফনের জন্য ফটিকছড়ির বাবুনগর থেকে তার মরদেহ হাটহাজারীতে নেয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেন স্থানীয়রা।

ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাধা দেয়ার ঘটনা ওভাবে ঘটেনি। তবে ওনারা চেয়েছেন ওনাদের এলাকার মানুষ এলাকায় দাফন করতে, কিন্তু সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মরদেহ হাটহাজারীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

মরদেহ হাটহাজারীতে নেয়ার আগে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে বাবুনগরীর মামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত ৪ আগস্ট তিনি আমার কাছে তার বাবা-মার কবরের পাশে জায়গা চেয়েছেন। আমি তাকে তার বাবা-মার পাশে কবর দেয়া হবে বলেছি।’

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শেষবারের মতো জুনায়েদ বাবুনগরীর মরদেহ তার নিজ গ্রাম বাবুনগরে নিয়ে আসা হয়।

শুরুতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও পরিবারের পক্ষ থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হাটহাজারী মাদ্রাসায় এবং এরপর রাত সাড়ে ৯টায় ফটিকছড়ির বাবুনগর মাদ্রাসায় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানানো হয়। জানাজা শেষে বাবুনগরীর নিজ গ্রাম বাবুনগরে বাবা মায়ের পাশে দাফন করার সিদ্ধান্ত হয়।

এরমধ্যে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাটহাজারী মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হাটহাজারী মাদ্রাসায় দাফন ও জানাজার নামাজের সময় রাত ১১টা নির্ধারণ করা হয়।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।

হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইদ্রিস নিউজবাংলাকে বাবুনগরীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির আল্লামা শাহ আহমেদ শফীর মৃত্যুর পর কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠনটির নেতৃত্বে আসেন বাবুনগরী। গত ১৫ নভেম্বর সম্মেলন করে তাকে আমির ঘোষণা করে হেফাজত।

নতুন কমিটিতে শফীপন্থিদের ঠাঁই হয়নি। তারা বাবুনগরীর কমিটিকেও মেনে নেননি। প্রয়াত আমির শফীর ছেলে আনাস মাদানীর অনুসারীদের অভিযোগ, এই কমিটি বৈধ নয়। আগের কমিটির ৫০ জনেরও বেশি নেতা সম্মেলনে দাওয়াতই পাননি।

এ ছাড়া, শফীপন্থিরা অভিযোগ তোলে, সাবেক আমিরের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ইস্যুতে হেফাজতে স্পষ্টত বিভক্তি দেখা দেয়। গত ১৭ ডিসেম্বর ৩৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয় চট্টগ্রামের একটি আদালতে। আসামিদের সিংহভাগই ছিলেন বাবুনগরীর বর্তমান কমিটির নেতা।

শফীর মৃত্যুর জন্য বাবুনগরীকেও ইঙ্গিত করেন অনেকে। তাকে ও তার অনুসারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তোলেন প্রয়াত আমিরের অনুসারীরা। শফীর মৃত্যুতে হত্যার অভিযোগে যে মামলা হয়েছিল, সে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা পিবিআই।

বাবুনগরী আমিরের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল হেফাজত। বিশেষ করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সময় সংগঠনটির সহিংসতা চালালে সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে সংগঠনটির। অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের ওপর চড়াও হয় সরকার।

হেফাজতের শীর্ষ পর্যায়ের অন্তত ৫০ নেতাকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের সবাইকে সহিংসতার একাধিক মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার অভিযানের মুখে সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় ব্যর্থ হওয়ার পর ২৫ এপ্রিল রাতে এক ভিডিও বার্তায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দেন আমির বাবুনগরী।

নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার থামাতে এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তিনবার হেফাজতের মহাসচিব নূরুল ইসলাম জিহাদীর নেতৃত্বে সাক্ষাৎ করে সংগঠনটির একটি প্রতিনিধিদল, কিন্তু থামেনি ধরপাকড়।

এসব সাক্ষাৎ ব্যর্থ হওয়ায় গত ৬ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে নিজেই দেখা করেন হেফাজতের আমির বাবুনগরী। তাতেও কাজ হয়নি। নেতাকর্মীদের গণপ্রেপ্তারে অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে হেফাজত।

এ বিভাগের আরো খবর