বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হেফাজতের আমির বাবুনগরীর মৃত্যু

  •    
  • ১৯ আগস্ট, ২০২১ ১২:৫৫

হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইদ্রিস জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বাবুনগরী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাত ১১টায় হাটহাজারী মাদ্রাসায় জানাজা শেষে সেখানেই তাকে দাফন করা হবে।

চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হেফাজতে ইসলামের আমির ও হাটহাজারী মাদ্রাসার পরিচালক জুনায়েদ বাবুনগরীর মৃত্যু হয়েছে।

দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইদ্রিস নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সিএসসিআর নামে চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাবুনগরীর মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।

মীর ইদ্রিস বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে বাবুনগরী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর অ্যাম্বুলেন্সে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।’

তবে হাসপাতালের দেয়া মৃত্যু সনদে বলা হয়েছে, তাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। বাবুনগরী হৃদরোগ, কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন।

সিএসসিআর হাসপাতাল থেকে দেয়া বাবুনগরীর মৃত্যু সনদ

হাসপাতাল থেকে বাবুনগরীর মরদেহ দুপুর দুইটার দিকে হাটহাজারী মাদ্রাসায় নেয়া হয়।

হেফাজত নেতা মীর ইদ্রিস জানান, হাটহাজারী মাদ্রাসায় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তার প্রথম জানাজা হবে। রাত সাড়ে নয়টার দিকে ফটিকছড়ি বাবুনগরী মাদ্রাসার মাঠে দ্বিতীয় জানাজা হবে।

পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মাদ্রাসার মুফতি জসীমউদ্দিন মাইকে জানান, বাবুনগরীর জানাজা রাত ১১টায় হাটহাজারী মাদ্রাসায় হবে। তারপর মাদ্রাসার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। বাবুনগরীর মরদেহ ফটিকছড়িতে নেয়া হবে না।

গত ৮ আগস্ট দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনাভাইরাসের টিকা নেন বাবুনগরী।

টিকা নেয়ার পর তিনি বলেন, ‘টিকাকে হারাম বা নাজায়েজ বলা যাবে না… শরিয়তের দৃষ্টিতে হারাম বা নাজায়েজ বলা যাবে না। চিকিৎসা জায়েজ। চিকিৎসাবিধি মেনে চলতে হবে। করোনার টিকা নিয়েছি। কোনো সমস্যা হয়নি।’

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির আল্লামা শাহ আহমেদ শফীর মৃত্যুর পর কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠনটির নেতৃত্বে আসেন বাবুনগরী। গত ১৫ নভেম্বর সম্মেলন করে তাকে আমির ঘোষণা করে হেফাজত।

নতুন কমিটিতে শফীপন্থিদের ঠাঁই হয়নি। তারা বাবুনগরীর কমিটিকেও মেনে নেননি। প্রয়াত আমির শফীর ছেলে আনাস মাদানীর অনুসারীদের অভিযোগ, এই কমিটি বৈধ নয়। আগের কমিটির ৫০ জনেরও বেশি নেতা সম্মেলনে দাওয়াতই পাননি।

এ ছাড়া, শফীপন্থিরা অভিযোগ তোলে, সাবেক আমিরের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ইস্যুতে হেফাজতে স্পষ্টত বিভক্তি দেখা দেয়। গত ১৭ ডিসেম্বর ৩৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয় চট্টগ্রামের একটি আদালতে। আসামিদের সিংহভাগই ছিলেন বাবুনগরীর বর্তমান কমিটির নেতা।

শফীর মৃত্যুর জন্য বাবুনগরীকেও ইঙ্গিত করেন অনেকে। তাকে ও তার অনুসারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তোলেন প্রয়াত আমিরের অনুসারীরা। শফীর মৃত্যুতে হত্যার অভিযোগে যে মামলা হয়েছিল, সে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা পিবিআই।

বাবুনগরী আমিরের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল হেফাজত। বিশেষ করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সময় সংগঠনটির সহিংসতা চালালে সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে সংগঠনটির। অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের ওপর চড়াও হয় সরকার।

হেফাজতের শীর্ষ পর্যায়ের অন্তত ৫০ নেতাকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের সবাইকে সহিংসতার একাধিক মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার অভিযানের মুখে সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় ব্যর্থ হওয়ার পর ২৫ এপ্রিল রাতে এক ভিডিও বার্তায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দেন আমির বাবুনগরী।

নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার থামাতে এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তিনবার হেফাজতের মহাসচিব নূরুল ইসলাম জিহাদীর নেতৃত্বে সাক্ষাৎ করে সংগঠনটির একটি প্রতিনিধিদল, কিন্তু থামেনি ধরপাকড়।

এসব সাক্ষাৎ ব্যর্থ হওয়ায় গত ৬ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে নিজেই দেখা করেন হেফাজতের আমির বাবুনগরী। তাতেও কাজ হয়নি। নেতাকর্মীদের গণপ্রেপ্তারে অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে হেফাজত।

এ বিভাগের আরো খবর