বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আফগানদের আশ্রয় দেয়ার প্রস্তাবে বাংলাদেশের না

  •    
  • ১৬ আগস্ট, ২০২১ ২২:১৭

এ কে আব্দুল মোমেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বলেছি, রোহিঙ্গা নিয়ে এমনিতেই আমরা বড় কষ্টে আছি। আমরা ছোট দেশ। অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ। আমাদের তো এত জায়গা নেই। আমাদের অর্থনীতিও তোমাদের পর্যায়ের ভালো না। তাই তোমাদের অনুরোধ রাখতে পারছি না। নতুন করে এটা লোকও আশ্রয় দেয়া আমাদের জন্য অসম্ভব।’

তালেবানের ক্ষমতা দখলের মুখে দেশ ছাড়তে মরিয়া আফগানিস্তানের কিছু নাগরিককে সাময়িক আশ্রয় দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

সোমবার রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব নাকচ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘ওয়াশিংটনে আমাদের রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলামের কাছে এবং পরে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলার কিছু আফগান নাগরিককে সাময়িকভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার অনুরোধ জানায়।

‘যুক্তরাষ্ট্র এ সময় জানায় তারা বাংলাদেশসহ কিছু বন্ধু দেশকে এ অনুরোধ জানিয়েছে। এরপর আমরা তাদের কাছে জানতে চাইলাম কোন সেই বন্ধু দেশ। এর কোনো সদুত্তোর দিতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ। কতজন আফগানকে কতদিনের জন্য রাখতে হবে, তাও তারা জানাতে পারেনি।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ এমনিতেই ১১ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে নাজুক পরিস্থিতিতে আছে। আফগান নাগরিকদের প্রশ্নে বিষয়টি ওয়াশিংটনকে জানানো হয়েছে।

আব্দুল মোমেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তোমরা তো অনেক রোহিঙ্গা রেখেছো। আমরা তাদের হেল্পও করছি। আমাদের অনেক বন্ধু আফগানিস্তানে আছেন, তারা দ্রুত কাবুল ছাড়তে চায়। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি ইস্যু। বাংলাদেশ যদি ওদের স্বল্পদিনের জন্য আশ্রয় দেয়, তাহলে অসহায় মানুষগুলোকে দ্রুত সরানো যাবে।

‘আমরা বলেছি যে, তোমরা যে আমাদের কথা ভেবেছো, এজন্য ধন্যবাদ। রোহিঙ্গা নিয়ে এমনিতেই আমরা বড় কষ্টে আছি। আমরা ছোট দেশ। অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ। আমাদের তো এত জায়গা নেই। আমাদের অর্থনীতিও তোমাদের পর্যায়ের ভালো না। তাই তোমাদের অনুরোধ রাখতে পারছি না। নতুন করে এটা লোকও আশ্রয় দেয়া আমাদের জন্য অসম্ভব।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলামের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রথমে এই প্রস্তাব পাঠায় ওয়াশিংটন। রোববার রাতেই রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে জবাব পাঠায় ঢাকা।

সোমবার ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার একই প্রস্তাব নিয়ে আসেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। সেখানে মিলারকেও বাংলাদেশের অপরাগতার কথা জানিয়ে দেন পররাষ্ট্র সচিব।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজ সকালে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এসেছিলেন। সচিবের সঙ্গে আলাপ করেছেন। ওনাকেও (রাষ্ট্রদূত) একই কথা বলে দেয়া হয়েছে।’

আফগানিস্তানে তালেবানের পুনরুত্থান ইস্যুতেও মন্তব্য এসেছে বাংলাদেশ সরকার থেকে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তালেবান আফগানিস্তানে জনগণের সরকার গঠন করলে তাদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসবে বাংলাদেশও।

আফগানিস্তানে তালেবান সরকার গঠন করলে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন হবে, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যদি তালেবান সরকার গঠন করে আর ‌সেটা যদি জনগণের সরকার হয়, অবশ্যই তাদের জন্য আমাদের সাহায্য ও বন্ধুত্বের দরজা খোলা।’

আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আফগানিস্তান আমাদের প্রতিবেশী দেশ, আমাদের বন্ধু দেশ। আমরা চাই, তাদের দেশেও উন্নতি হোক। আমরা সবাইকে নিয়ে সব দেশের উন্নয়ন করতে চাই। আফগানিস্তানে যে সরকারই আসুক, সেটা যদি জনগণের সরকার হয় আমরা তা গ্রহণ করব।’

দুই দশক পর আবারও আফগানিস্তানের ক্ষমতার মসনদে বসতে যাচ্ছে তালেবান। রাজধানী কাবুল, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ প্রায় সবকিছুই এখন তাদের দখলে। দেশটির রাষ্ট্রপতি আশরাফ ঘানি আফগানিস্তান ছেড়ে তাজিকিস্তান হয়ে ওমানে আশ্রয় নিয়েছেন।

আফগানিস্তানে তালেবানদের সরকার ঘোষণা কেবল সময়ের ব্যাপার। এমন পরিস্থিতিতে দেশটিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তালেবান থেকে বলা হয়েছে, তারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। ভয়ে বা আতঙ্কিত হয়ে নাগরিকেরা যেন দেশ না ছাড়েন।

তালেবানদের এমন আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছে না কাবুলবাসী। দেশ ছাড়তে উন্মুখ তারা; ভিড় করছেন বিমানবন্দরে। হুড়োহুড়ি করে বিমানে উঠতে গিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। দুই জন চেয়েছিলেন বিমানের চাকার সঙ্গে নিজেদের বেঁধে দেশ ছাড়তে। তা হলো না। ছিটকে মৃত্যু হয়েছে তাদের।

এ বিভাগের আরো খবর