আফগানিস্তান থেকে ৪৫ হাজার মানুষকে সরাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সহযোগিতা চেয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন বিমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব আসেনি। তবে কথা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি থার্ড পার্টির মাধ্যমে দেশটিতে আটকা পড়া ৪৫ হাজার মানুষকে সরাতে একটি প্রস্তাব এসেছে। আমরা গত কয়েক দিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলছি।
‘এ-সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের আগে জানতে হবে কাবুল বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সুবিধা এই মুহূর্তে আছে কি না। পাশাপাশি যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের বিষয়গুলো কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘তার ওপর যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয় এ জন্য ইন্স্যুরেন্স কাভারেজ পাব কি না সেটি নিয়েও কথা হচ্ছে। এরই মধ্যে আমরা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দিয়েছি। তারা জবাব দেয়ার পর এ বিষয়টি আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
বিমান ছাড়াও মালয়েশিয়াভিত্তিক এয়ার এশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়াভিত্তিক গারুদা এয়ারকেও একই প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
দুই দশক পর আবারও আফগানিস্তানের ক্ষমতার মসনদে বসতে যাচ্ছে তালেবান। রাজধানী কাবুল, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ প্রায় সবকিছুই এখন তাদের দখলে। দেশটির রাষ্ট্রপতি আশরাফ ঘানি আফগানিস্থান ছেড়ে তাজিকিস্তান হয়ে ওমানে আশ্রয় নিয়েছেন।
দেশটিতে তালেবানদের সরকার ঘোষণা কেবল সময়ের ব্যাপার। এমন পরিস্থিতিতে দেশ ছাড়তে কাবুল বিমানবন্দরে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে আফগানিস্তানের নাগরিকরা।
কাবুলে তালেবানদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর সেখানকার হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রোববার রাত থেকে দেখা যাচ্ছে ভয়াবহ পরিস্থিতি। আতঙ্ক বিরাজ করছে আফগানিস্তানের জনসাধারণের মধ্যে। দেশ ছাড়তে বিমানবন্দরে জড়ো হয়েছেন তারা।
জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে বিমানবন্দর। একটি বিমান নামা মাত্রই ভরে যাচ্ছে মুহূর্তে।
রোববার বিকেলে কাবুলে প্রবেশ করেই তালেবান থেকে বলা হয়েছিল, তারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। ভয়ে বা আতঙ্কিত হয়ে নাগরিকেরা যেন দেশ না ছাড়েন।
তালেবানদের এমন আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছে না কাবুলবাসী। দেশ ছাড়তে উন্মুখ তারা। ছুটে যাচ্ছেন বিমানবন্দরে।
হুড়াহুড়ি করে বিমানে উঠতে গিয়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া, বিমানের চাকার সঙ্গে নিজেকে বেঁধে দেশ ছাড়তে গিয়ে পড়ে মৃত্যু হয়েছে আরও দুই জনের।
বাংলাদেশ বিমানের কর্মকর্তারা বলছেন, কয়েকটি আন্তর্জাতিক চার্টারিং কোম্পানি ১৫ দিন আগে থেকে বিমানের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। কাবুলে থাকা ৪৫ হাজার মানুষকে দেশটি থেকে নিরাপদে বের করতে বিমানের সহযোগিতা চেয়ে তারা একটি প্রস্তাবও দেয়। সবশেষ দু দিন আগেও তাদের সঙ্গে বিমান কর্তৃপক্ষের আলোচনা হয়েছে।