পদ্মা নদী পারাপারে ফেরি কাকলি উপযোগী ছিল না বলে দাবি করেছেন ফেরিচালক বাদল হোসেন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হলেও কোনো জবাব দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার সকালে পদ্মা সেতুতে ধাক্কা লাগার পর ফেরিটি শিমুলিয়া ঘাটে ভিরিয়ে নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান ফেরিচালক বাদল হোসেন।
তিনি জানান, গত ১১ আগস্ট বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডাব্লিউটিসি) বরাবর তিনি লিখিত দেন, ফেরি কাকলি দিয়ে বর্তমানে পদ্মা নদী পাড়ি দেয়া সম্ভব নয়। প্রচন্ড স্রোতে ফেরিটি ঠিকমতো কাজ করে না।
তিনি বলেন, ‘ওই লিখিত পত্রে ফেরিটি অন্য কোনো জায়গায় স্থানান্তরের কথাও উল্লেখ করি। কিন্তু এরপরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক (মেরিন) আহমেদ আলী বলেন, ‘আমি এ রকম কোনো চিঠি এখনও পাইনি, তাই কিছু জানাতে পারছি না।’
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এরই মধ্যে একটি সভায় পদ্মা সেতুর কোন স্থান দিয়ে ফেরি পারাপার হবে-তা নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেতুর ২ নম্বর পিলার থেকে ৬ নম্বর পিলারের মধ্য দিয়ে ফেরি চলাচল করার কথা।
‘ওই সভায় পদ্মা সেতুর বিগ্রেড কমান্ডার, বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে ফেরি চলাচলের নীতিগত সিদ্ধান্তের পরও ফেরি কেন সেতুর ১০ নম্বর পিলারের কাছ দিয়ে গেল- তা আমাদেরও প্রশ্ন।’
চার দিনের ব্যবধানে শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয় ফেরি কাকলি। বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলিয়া ঘাটে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।
বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহমেদ বলেন, ‘ফেরিটি পদ্মা সেতুর ১১-১২ পিলারের মধ্য দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নদীর প্রচণ্ড স্রোত ও বাতাসের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয়। এতে ফেরির বাইরের অংশে একটু ক্ষতি হয়েছে।
‘এ ছাড়া সেতুর পিলারে তেমন কিছু হয়নি। পানির স্তরের ওপরে থাকায় ফেরিতে পানিও ওঠেনি। ধাক্কা লাগার পর ফেরিটি নিরাপদে শিমুলিয়া ঘাটে আসে। কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’
ফেরি কাকলির চালক বাদল হোসেন বলেন, ‘আমাদের আসার কথা ছিল বাম দিয়ে, কিন্তু বাতাস আর ঢেউয়ের কারণে আমরা আসতে পারিনি।
‘ধাক্কা যে লাগছে ফেরিতে থাকা যাত্রীরাও টের পায়নি, পিলারেরও কিছু হয়নি।’
এর আগেও তিনবার বাংলাবাজার ঘাট থেকে যাওয়ার পথে পদ্মা সেতুর পিলারে আঘাত করে ফেরি। গত ২০ ও ২৩ জুলাই দুটি ফেরি ১৬ ও ১৭ নম্বর পিলারে এবং ৯ আগস্ট ১০ নম্বর পিলারে আঘাত করে।
এসব ঘটনায় থানায় জিডি, মামলা, তদন্ত কমিটি ও ফেরি চালকদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।