বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সমালোচনার পর অর্ধেক গাড়ির আদেশ বাতিল

  •    
  • ১২ আগস্ট, ২০২১ ১১:৪৭

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চার মাসের বিধিনিষেধ তোলা হয় বুধবার। এদিন থেকে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হলেও, অর্ধেক যানবাহন সড়কে নামানোর শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলো সরকার।

অর্ধেক বাস চালুর নির্দেশনা থেকে সরে এসেছে সরকার। সমালোচনার মধ্যে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে বাসসহ সব গণপরিবহন চলাচলের নতুন সিদ্ধান্ত এসেছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়, যা কার্যকর হবে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে।

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চার মাসের বিধিনিষেধ তোলা হয় বুধবার। এদিন থেকে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হলেও, অর্ধেক যানবাহন সড়কে নামানোর শর্ত জুড়ে দেয় সরকার।

এ বিষয়ে গত রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দেয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সড়ক, রেল ও নৌ-পথে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন, যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সড়ক পথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দপ্তর, সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।’

এর আগে লকডাউন ও শাটডাউন সীমিত করার পর গণপরিবহন তার আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। আর ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল ৬০ শতাংশ। এবার বলা হয়, যাত্রী থাকবে সব আসনেই, কিন্তু গাড়ি চলবে অর্ধেক।

এতে সড়কে গাড়ি কমে যাবে, আর তখন যাত্রী বেশি থাকলে তৈরি হবে ভিড়, গাড়িতে গাদাগাদি করে চলতে হতে পারে। শাটডাউন ওঠানোর প্রথম দিন বুধবার রাজধানীতে তাই দেখা গেছে।

একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ নিউজবাংলাকে বলেছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত অগ্রহণযোগ্য।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেনিন চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, যে সিদ্ধান্তে মানুষের গাদাগাদি ও ভিড় তৈরি হবে, সে সিদ্ধান্ত অবশ্যই গ্রহণযোগ্য নয়। সেটি ক্ষতিকর। ঢাকা শহরে সব অফিস খুলে দেয়া হলে অফিসমুখি মানুষের চাপ বাড়বে। অর্ধেক বাস চললে স্বাস্থ্যবিধিতে উদাসীনতার সঙ্গে সঙ্গে ভোগান্তিও বাড়াবে।

অর্ধেক গাড়ি সড়কে কীভাবে নামবে, তার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এটা ঠিক করবে স্থানীয় প্রশাসন।

পরিবহন মালিক সমিতির নেতা খন্দকার এনায়েতউল্লাহ এই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলেছেন। তার মতে, এটা বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন হবে। আবার সড়কে গাড়ি কমিয়ে দিলে তাতে চলাচলের ভোগান্তি বাড়ার পাশাপাশি গাড়িতে ভিড়ও বাড়বে। এতে স্বাস্থ্যবিধি পালন হুমকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সরকারের নেয়া সিদ্ধান্তের পক্ষে নিজের যুক্তি তুলে ধরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন একটি ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। সেদিন তিনি বলেন, ‘অর্ধেক আসনের নামে বাসগুলো সব আসনে যাত্রী নেয়, ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রেও ৬০ শতাংশ বেশি রাখে। তাই জনভোগান্তি কমাতে নেয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত।’

তিনি বলেন, ‘অর্ধেক যাত্রী না করে ফুল যাত্রী করা হয়েছে এ জন্য যে, বারবার অর্ধেক যাত্রী দিলে ওরা ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া নিচ্ছে, আবার একই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে ফুল যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে। লাভ হচ্ছে না এতে। শুভংকরের ফাঁকি। তাই বলা হয়েছে সমসংখ্যক যাত্রী নেয়ার কথা।’

অফিস চালু হলে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলে সড়কে মানুষের চলাচল যখন বাড়বে, তখন অর্ধেক গাড়িতে ভিড় যে আরও বেশি হবে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা মনে করছেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে প্রয়োজন ছাড়া মানুষ খুব একটা বের হবে না।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অধিক্ষেত্রের মধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী (গাড়ি চলবে), এমনিতেই মানুষ কম বের হবে। আস্তে আস্তে হয়ে যাবে। প্রথমে শুরুটা করুক। আমরা তো ধীরে ধীরে বাড়াব, বাড়ানো হবে।’

এমন বাস্তবতায় বিধিনিষেধ শিথিলের একদিন পরই সকল গণপরিবহন চলার অনুমতি দিয়েছে সরকার।

তবে সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরা শতভাগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব নিতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে সরকার।

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোও খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে খুলে দেয়া হবে রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো।

এ বিভাগের আরো খবর