করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত লকডাউনে বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল। বিধিনিষেধ অনেকটাই শিথিল করায় বুধবার সকাল থেকে চলতে শুরু করেছে ট্রেন।
রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে বুধবার সকালেই দেখা যায় যাত্রীদের ভিড়। দীর্ঘ বিরতির পর চালু ট্রেনে কঠোরভাবে মানা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।
স্বাস্থ্যবিধি মানাতে রেলওয়ে স্টেশনেও দেখা গেছে বেশ কড়াকড়ি। তারপরও যাত্রীদের অনেকে মানেননি মাস্ক ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা।
সুযোগ পেলেই অনেককে মুখ থেকে মাস্ক নামিয়ে ফেলতে দেখা গেছে। তাদের আলাপ করতে দেখা যায় শারীরিক ব্যবধান না রেখে, তবে স্টেশনের পরিবেশে খুশি যাত্রীরা।
সকাল থেকেই সারা দেশে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। সব আসনে যাত্রী নেয়ার সুযোগ থাকলেও শুরুর দিনে কমলাপুরে ভিড় ছিল তুলনামূলক কম। অনেক ট্রেন ছেড়ে গেছে বেশির ভাগ আসন খালি রেখে।
কমলাপুর স্টেশন থেকে সকাল ৬টা ২০ মিনিটে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে যায় পারাবত এক্সপ্রেস। এর কিছুক্ষণ পরই চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছাড়ে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস।
সকাল সাড়ে ৭টায় দেওয়ানগঞ্জের উদ্দেশে তিস্তা এক্সপ্রেস যাত্রা শুরু করে। পৌনে ৮টায় মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস চট্টগ্রামের উদ্দেশে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ছাড়ে।
স্টেশনে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লকডাউনে ঘরবন্দি সময় পার করে অনেকেই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে যাচ্ছেন গ্রামের বাড়িতে।
যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে ঢুকতে হচ্ছে স্টেশনে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারেও আছে কড়াকড়ি।
মুখে মাস্ক ছাড়া কাউকে স্টেশনে ঢুকতে দিচ্ছেন না রেলওয়ের কর্মীরা। ভেতরে ঢোকার পর নানা অজুহাতে যাত্রীরা অনেকেই মাস্ক খুলে রাখছেন।
সকাল থেকেই যাত্রী ও স্টাফদের পদচারণে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন সরব হয়ে ওঠে। নির্ধারিত সময়ে ট্রেনগুলো ছেড়ে যাওয়ায় প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয়নি ট্রেনের জন্য।
প্রতিটি ট্রেন যাত্রা শুরুর আগে বগিগুলোর ভেতরে জীবাণুনাশক স্প্রে করতে দেখা যায় রেলওয়ের কর্মীদের।
জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসে সিলেট যেতে দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে প্ল্যাটফর্মে বসেছিলেন শহিদুল ইসলাম।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি পরিবার নিয়ে, ঈদে যেতে পারিনি তাই। এখন সহজেই ট্রেনের টিকিট পেয়েছি।’
সকাল থেকে যাত্রীর ভিড় দেখা গেছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। ছবি: সাইফুল ইসলাম/নিউজবাংলা
শাহাদাত হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, ‘লকডাউন খুলছে, তাই কয়েকটা দিন বাড়িতে ঘুরতে যাচ্ছি। প্রথম দিনেই টিকিট কেটেছিলাম অনলাইনে; ঝামেলা হয়নি।’
সবুজ আলী নামের এক যাত্রী বলেন, ‘ট্রেনে ভ্রমণ সব সময় নিরাপদ ও আনন্দের মনে হয়। লকডাউনের মধ্যে একটা জরুরি কাজে ঢাকাতে এসেছিলাম। কাজ শেষে ট্রেনেই বাড়িতে যাচ্ছি।’
ঢাকা থেকে বুধবার ২৫ জোড়া আন্তনগর ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল। তবে ছেড়েছে ২১ জোড়া।
সকাল থেকে সারা দেশে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ছবি: আমিনুর রহমান হৃদয়/নিউজবাংলা
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলে রয়েছে ৪ জোড়া ট্রেন। সেগুলো ঢাকায় ঢুকলে কাল (বৃহস্পতিবার) থেকে প্রতিদিন ২৫ জোড়া আন্তনগর ট্রেন ছাড়বে।
‘সারা দেশে চলবে ৩৮ জোড়া আন্তনগর ট্রেন, ২০ জোড়া মেইল ও কমিউটার ট্রেন।’
তিনি জানান, শুরুর দিনে প্রত্যেকটি ট্রেন সময়মতো ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রীদের অপেক্ষা অথবা ভোগান্তি নেই।