এবার জাতীয় শোক দিবসে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের টাইমস স্কয়ারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ও অন্যান্য তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর অংশ হয়েছে আনোয়ার গ্রুপ ও বাংলাদেশ ফিন্যান্স। ২৫ লাখ করে ৫০ লাখ টাকা সহায়তা করছে গ্রুপ দুটি। এর আগে বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড এ কাজে ২৫ হাজার ডলার সহায়তা দেয়।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতিষ্ঠান দুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের কাছে চেক হস্তান্তর করে।
নিউইয়র্ক ড্রিম প্রোডাকশনের এ উদ্যোগে সহযোগিতা করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতার অংশ হয়েছে এক্সিম ব্যাংক, আনোয়ার গ্রুপ ও বাংলাদেশ ফিন্যান্স।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন জানান, ‘১৫ আগস্ট রাত ১২টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় প্রতি দুই মিনিটে ১৫ সেকেন্ড করে পুরো বিলবোর্ডে চলবে এই প্রদর্শনী। টাইমস স্কয়ারে বঙ্গবন্ধুর আলো ঝলমলে ছবি ২৪ ঘণ্টায় ভেসে উঠবে মোট ৭২০ বার।’
প্রবাসীরা নিজ উদ্যোগে এসব আয়োজন করেছেন বলে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের অংশ বিশেষসহ স্মরণীয় কিছু ছবি ও ক্যাপশন প্রদর্শনীতে প্রাধান্য পাবে। এ বিষয়ে টাইমস স্কয়ারের বিলবোর্ডের সময় ঘণ্টা হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কী ধরনের গ্রাফিক্স প্রদর্শন করা হবে তার একটি নমুনা বিলবোর্ড কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়ে সেটার অনুমোদনও নেয়া হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই টাইমস স্কয়ারে লাখ লাখ মানুষ চলাচল করে, তার মধ্যে বাংলাদেশিদের সংখ্যাও কম নয়। এ আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশিসহ লাখো বিদেশি বঙ্গবন্ধুকে দেখবে এবং তার সম্পর্কে ধারণা পাবে।’
এর আগে গত ১৫ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে এ উদ্যোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন ড্রিম প্রোডাকশনের প্রধান নির্বাহী ফাহিম ফিরোজ।
সেদিন তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশে-বিদেশে সরকারি-বেসরকারিভাবে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৫ আগস্ট ম্যানহাটনের ঐতিহাসিক টাইমস স্কয়ারের আইকনিক বিলবোর্ডে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধুর ছবি প্রদর্শনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক চিন্তা এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানানোর উদ্দেশ্যে নিজস্ব উদ্যোগে এ কাজ করা হচ্ছে। এর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সম্পৃক্ততা নেই বলে ড্রিম প্রোডাকশনের প্রধান নির্বাহী জানান।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গত মাসে আমি যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছিলাম, তখন ফাহিম আমাকে বিষয়টি বলেন। আমি দেশে এসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টা বলি। আমরা সরকার তো স্পন্সর করতে পারব না। টাকা পয়সাও দিতে পারব না। তিনি স্পন্সর খুঁজতে বলেন। এরপর সবাই স্বেচ্ছায় সহায়তা করছেন।
তিনি বলেন, এটা অনেক খরচের বিষয়। এক্সিম ব্যাংক এই কাজে অংশ নিয়েছে, তাতে আমি খুশি। আজ আনোয়ার গ্রুপ ও বাংলাদেশ ফিন্যান্স অংশ নিল।
‘কারণ আমি অনেকবার এটা করা চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারিনি। টাইম স্কয়ার কর্তৃপক্ষ কোনো সরকারের আবেদন গ্রহণ করে না। এজন্য স্থানীয় কমিয়্যুনিটিকে আবেদন করতে হয়। এটা একটা সাকসেস স্টোরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, আমি আর একটি মুজিব শতবর্ষ পাব না। স্বাধীনতার ৫০ বছর পাব না।’