মহান মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং চেতনা বিকাশে ব্যক্তি, সংগঠন বা সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ অবদান এবং গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকাকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি জানাতে ‘মুক্তিযুদ্ধ পদক’ প্রবর্তন করেছে সরকার।
সোমবার ‘মুক্তিযুদ্ধ পদক নীতিমালা-২০২১’-এর প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়েছে, সাতটি ক্যাটাগরিতে দেয়া হবে এই রাষ্ট্রীয় পদক।
ক্যাটাগরিগুলো হলো:
# স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে সংগঠনের ভূমিকা
# সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
# স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন
# মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতাবিষয়ক সাহিত্য রচনা
# মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র, তথ্যচিত্র, নাটক নির্মাণ বা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড
# মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিষয়ক গবেষণা
# মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ
এ ছাড়া সরকার চাইলে অন্য কোনো ক্ষেত্রেও এ পদক দেয়া হতে পারে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রতি বছরের ১৫ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘মুক্তিযুদ্ধ পদক’ দেয়া হবে।
বিজয়ীদের দেয়া হবে ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম স্বর্ণ দিয়ে তৈরি একটি পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা এবং দুই লাখ টাকা।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যক্তি পর্যায়ে এ পদকের জন্য মনোনীত ব্যক্তিকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। তবে, মহান মুক্তিযুদ্ধে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা বিদেশি নাগরিককেও এ পদক প্রদান করা যাবে। পদক দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তির সামগ্রিক জীবনের কৃতিত্ব ও অবদানকে গুরুত্ব দেয়া হবে।
বেসরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সেটিকে অবশ্যই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বীকৃত কোনো প্রতিষ্ঠান অথবা যুদ্ধকালীন বা যুদ্ধ-পরবর্তী সর্বজনবিদিত সংগঠন হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালনে অনন্য হতে হবে।
সরকারি দপ্তর, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে সরাসরি অবদান রাখা মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা এর অধীনস্থ দপ্তর, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হবে।
রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে বা ফৌজদারি আইনে শাস্তি পাওয়া বা ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত বা দেউলিয়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এ পদক প্রাপ্তির জন্য বিবেচিত হবেন না।
একবার পদক পাওয়ার পর ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পরবর্তী ১০ বছরে একই বিষয়ে পুনরায় পদকের জন্য বিবেচিত হবেন না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এ পদক দেয়া হবে না।
বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ‘মুক্তিযুদ্ধ পদক’ দিতে মনোনয়ন আহ্বান করবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। মনোনয়ন আহ্বান করা হলে তা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে সবাইকে জানানো হবে।