বিনা টিকিটে বা অনুমতি ছাড়া কেউ সরকারি চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করলে হবে দুই মাসের জেল। সেই সঙ্গে গুনতে হবে জরিমানা। এমন বিধান রেখে আসছে ‘জাতীয় চিড়িয়াখানা আইন, ২০২১’।
এই আইনের খসড়ায় সোমবার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আইনে দুই বছর জেল এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা চেয়েছিল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। তাতে সায় দেয়নি মন্ত্রিসভা।
সচিবালয়ে সোমবার দুপুরে মন্ত্রিসভার বৈঠক-পরবর্তী সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। জানান, প্রস্তাবিত আইনের অপরাধ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের আনা প্রস্তাব মন্ত্রিসভা গ্রহণ করেনি।
সচিব বলেন, ‘অপরাধের বিষয়ে বলা হয়েছে, কেউ যদি ফি ব্যতিরেকে ঢোকে তাহলে অনধিক দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অনধিক পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা। এটা ক্যাবিনেটই চেঞ্জ করে দিয়েছে। কারণ ঢোকার ফি হয়তো ১০০ বা ২০০ টাকা, সেটার জন্য পাঁচ হাজার টাকার জরিমানা! এখন তো প্রবেশ ফি ২০ টাকা। সে ক্ষেত্রে (জরিমানা) অনধিক এক হাজার টাকা করা হয়েছে। আর দুই বছরের জেল না হয়ে, এটাকে অনধিক ২ মাসের জেল করা হয়েছে।’
ফি ছাড়া প্রবেশে বড় শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব আনলেও কোনো দর্শনার্থী বা অন্য কেউ যদি চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীর ক্ষতি করে, সে ক্ষেত্রে কী হবে সেটা ছিল না প্রস্তাবিত আইনে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘পশুর যদি কোনো ক্ষতি করে সেটা আইনে ছিল না। সে ক্ষেত্রে একটা পানিশমেন্টের ব্যবস্থা করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়কে রিকোয়েস্ট করা হয়েছে। যাতে এটা তারা দেখে দেয়। অন্যান্য দেশের আইনে কীভাবে আছে সেভাবে দেখে দেবে।’
এ ছাড়া, চিড়িয়াখানার সাধারণ ব্যবস্থাপনা, পশু-পাখি প্রতিপালন, চিড়িয়াখানা পরিচালনাসহ নানা বিষয় খসড়া আইনে তুলে ধরা হয়েছে।
সচিব বলেন, ‘একটি উপদেষ্টা পরিষদ থাকবে। যিনি মন্ত্রী থাকবেন তিনি সভাপতিত্ব করবেন।’
স্কুল, কলেজ, প্রতিবন্ধী, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, শিক্ষামূলক সফরে কেউ গেলে তাদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থার কথা আইনের খসড়ায় উল্লেখ রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এ ছাড়া বাংলাদেশ জাদুঘর আইন, ২০২১-খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তিনি বলেন, ‘১৯৮২ সালের অর্ডিন্যান্স ছিল এটি। যেহেতু অধ্যাদেশগুলো আইনে পরিণত হবে, তাই এটা নিয়ে আসা হয়েছে।’
স্থাবর নিদর্শন ধ্বংস করা হলে অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান এই আইনে যুক্ত করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, অস্থাবর নিদর্শন চুরি বা পাচার বা ক্ষতি করলে ৫ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।