দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় শর্ত সাপেক্ষে আগামী বুধবার থেকে অফিস-আদালত, যানবাহন, শপিংমল, দোকানপাট খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
আগামী দুই দিন পর শাটডাউন তোলার ঘোষণা দিলেও বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখার সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। তবে খাবার দোকান খোলা থাকবে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বেঁধে দেয়া স্বাস্থ্যবিধি; পরতে হবে মাস্ক।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো করোনা শনাক্ত হয়। উদ্বেগ থাকলেও প্রথম কয়েক মাসে ভাইরাসটি সেভাবে ছড়ায়নি।
গত শীতে দ্বিতীয় ঢেউ আসার উদ্বেগ থাকলেও সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই কমে আসে। একপর্যায়ে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে নেমে যায়, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবেচনায় মহামারি নয়, নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি।
তবে এ বছরের মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে শনাক্তের হার আবার বাড়তে থাকে। দ্বিতীয় ঢেউ নিশ্চিত হওয়ার পর এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ভারতে করোনার নতুন ধরনের কথা জানা যায়। ওই ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্তদের দ্রুত অসুস্থ করে দেয়, তাদের অক্সিজেন লাগে বেশি। ছড়ায়ও দ্রুত, তাই মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি।
করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে দফায় দফায় কঠোর বিধিনিষেধ, লকডাউন বা শাটডাউন দেয় সরকার।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকার ১ জুলাই থেকে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে, যা পরিচিতি পায় শাটডাউন হিসেবে। পরবর্তী সময়ে এই লকডাউন আরও সাত দিন বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়।
এরপর কোরবানির ঈদ উপলক্ষে আট দিনের জন্য শিথিল করা হয় এই শাটডাউন। পরে ২৩ জুলাই থেকে আবার বহাল করা হয় এই বিধিনিষেধ।
ঈদ-পরবর্তী শাটডাউন চলার কথা ছিল ৫ আগস্ট পর্যন্ত। তবে সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় তা বাড়ানো হয় আরও পাঁচ দিন।