নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুড লিমিটেডের সেজান জুস কারখানায় আগুনের ঘটনায় পুড়ে মারা যাওয়া আরও ২১ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এর আগে বুধবার ডিএনএ পরীক্ষার পর ২৪ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছিল সংস্থাটি।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান বলেন, ‘শনিবার ২১ মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। ৪৮ জনের মধ্যে যে তিনজনের ডিএনএ শনাক্ত করা যায়নি, সেগুলো আবার পরীক্ষা করা হচ্ছে। এরপর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
আগের ২৪ পরিবারের মতো এবারও ২১ পরিবারকে জেলা প্রশাসকের মাধমে ২৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
আগুনের ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে বুধবার সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেছিলেন, ‘মামলার অনেক অগ্রগতি আছে। আগুন কীভাবে লেগেছে, তার কাছাকাছি পৌঁছে গেছি আমরা। খুব শিগগির চার্জশিট দেব। বিদ্যুতের তার থেকে আগুন লেগেছে।’
৮ জুলাই রূপগঞ্জের হাশেম ফুড কারখানায় আগুনে পুড়ে মারা যান ৫২ শ্রমিক। তিনজনের পরিচয় শনাক্ত হওয়ায় তখনই স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
আগুনে পুড়ে যাওয়ায় বাকি লাশগুলো শনাক্ত করার উপায় ছিল না। পরে লাশগুলো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে রাখা হয়। স্বজনদের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা নিয়ে পরীক্ষার পর মিল পাওয়া মরদেহ হস্তান্তর করা হচ্ছে।
হাশেম ফুড লিমিটেডের কারখানায় ৮ জুলাই আগুন লাগলেও ৯ জুলাইয়ের আগে পুরোপুরি আগুন নেভানো যায়নি।
আগুন নেভাতে দীর্ঘ সময় লাগার কারণ মনে করা হচ্ছে কারখানার প্রতি ফ্লোরে মজুত করা দাহ্য পদার্থ। ছিল বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক, যা আগুন আরও ছড়িয়ে যেতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।
মালিকপক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই এই আগুনের সূচনা। তবে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনার পেছনে কারখানা কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা ও অব্যবস্থাপনা দায়ী বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সংস্থা।
এ ঘটনায় পুলিশ কারখানার মালিক আবুল হাশেম, তার চার ছেলেসহ আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে। তাদের চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
১৯ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করা হলে দুই ছেলেসহ আবুল হাশেমকে জামিন দেয় আদালত।