বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভ্রাম্যমাণ আদালতে শিশুকে সাজা, মুক্তি দিতে বলল হাইকোর্ট

  •    
  • ৪ আগস্ট, ২০২১ ১৬:০৪

এর আগে সকালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির দুই শিশুর মুক্তি চেয়ে বিচারপতিকে চিঠি দেন। বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের মুক্তিতে উদ্যোগ নেয় আদালত।

সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দণ্ড দেয়া দুই শিশুকে মুক্তির ব্যবস্থা নিতে ডিসিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বুধবার বিকেলে এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা সাইফুর রহমানকে নেত্রকোণার ডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

এর আগে সকালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির দুই শিশুর মুক্তি চেয়ে বিচারপতিকে চিঠি দেন। বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের মুক্তিতে উদ্যোগ নেয় আদালত।

সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা সাইফুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আদালতের আদেশের পর আমি নেত্রকোণার ডিসিকে টেলিফোনে আদালতের আদেশের বিষয়টি অবগত করি। তিনি জানান, শিশু দুটিকে ইতোমধ্যে আপিল শুনানি করে মুক্তি দেয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরে আইনজীবী শিশির মনির ই-মেইলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে চিঠিটি পাঠান।

এতে বলা হয়েছে, মোবাইল কোর্ট আইনবহির্ভূতভাবে দুই শিশুকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আইনে বলা আছে, শিশু আইনের বিধান প্রযোজ্য হওয়ার অর্থ হলো শিশু আদালতে তাদের বিচার হবে। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট সেটা না করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদের সাজা দিয়েছেন, যা আইনসম্মত হয়নি।

আইনজীবী শিশির মনির চিঠিতে যা লিখেছিলেন

আজ ৪ আগস্ট দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে দুই শিশুকে দণ্ড’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনে জানতে পারি, নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে দুই শিশুকে এক মাসের সাজা দিয়েছেন। এই রিপোর্ট পড়ে আমার কাছে মনে হয়েছে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। শিশু আইনের অধীন মোবাইল কোর্টের কোনো এখতিয়ার নেই। ফলে অত্র সাজা এখতিয়ারবহির্ভূত।

চিঠি পাঠানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। আমি অত্র আদালতের একজন অফিসার। আমার মনে আছে, ফতোয়ার মামলায় পত্রিকার রিপোর্ট দরখাস্ত হিসেবে গৃহীত হয়েছিল। ছাত্রজীবনে পড়েছি, একটি টেলিফোন কল নাকি এফআইআর হিসেবে গণ্য হয়েছিল। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রধান বিচারপতি বরাবর চিঠি পাঠিয়েছিলেন এক সন্তানহারা মা নীলাবতি বেহারা। সেই চিঠির ভিত্তিতে তিনি ক্ষতিপূরণও পেয়েছিলেন।

‘স্বচক্ষে দেখেছি, পত্রিকার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অনেক স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারি হয়েছে। বিচারও হয়েছে। জেল থেকে পাঠানো চিঠিগুলো জেল আপিল হিসেবে বিবেচিত হয়। এসব উদারহণ দেখে কিছুটা অতি উৎসাহী হয়ে এই পত্র লিখলাম। আশা করি, আমার এই পত্র বৃথা যাবে না।’

পত্রিকার প্রতিবেদনে যা উঠে এসেছে

ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে দুই শিশুকে এক মাসের দণ্ডাদেশ দিয়েছেন নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া।

গত রোববার রাতে জেলার আটপাড়ায় সুলতানা রাজিয়া তার নিজ কার্যালয়ে ওই দণ্ডাদেশ দেন। একই সঙ্গে শিশু দুটিকে গাজীপুরে অবস্থিত শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন। শিশু দুটি গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত নেত্রকোণা জেলা কারাগারে ছিল।

শিশু দুটির বাড়ি আটপাড়া উপজেলার দুওজ ইউনিয়নে। তাদের মধ্যে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েটির বয়স ১৫ বছর (জেএসসির নিবন্ধন কার্ড অনুযায়ী)। ছেলেটিও সমবয়সী।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে প্রায় দুই বছর ধরে তারা দুজন লেখাপড়ার পাশাপাশি ঢাকায় তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি নেয়। এ সময় উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি মেয়েটি ছেলেটিকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। ছেলেটি তা প্রত্যাখ্যান করে।

গত ঈদুল আজহায় তারা গামের বাড়িতে আসে। এরপর বিয়ের দাবিতে মেয়েটি গত বুধবার রাত থেকে ছেলের বাড়িতে অবস্থান নেয়। নিরুপায় হয়ে গত রোববার সন্ধ্যায় উভয় পরিবার তাদের বিয়ের আয়োজন করে। বাল্যবিবাহের খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়া সেখানে পুলিশ পাঠান। এরপর দুজনকে তার কার্যালয়ে এনে রাত ৮টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসান। বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ অনুযায়ী দুজনকেই এক মাসের জন্য আটকাদেশ দিয়ে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বলা হয়, তাদের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭-এর ৭(২) ধারায় এ আটকাদেশ দেয়া হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর