বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার সকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় কাদের বলেন, ‘দীর্ঘদিনের বিচারহীনতার সংস্কৃতি ডিঙিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকার হত্যাকারিদের নিয়মতান্ত্রিক বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ২০১০ সালে ফাঁসির রায় কার্যকরের মাধ্যমে বাঙালী জাতিকে কলংকমুক্ত করেন।
‘বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকরের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। কুটনৈতিক তৎপরতাও অব্যাহত রয়েছে।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে একদল বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে নিহত হন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ওই রাতে শুধু বঙ্গবন্ধুকেই নয়, হত্যা করা হয় তার পরিবারের বাকি সদস্যদেরও। সেই সময় বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
এ ঘটনার পর খুনিদের বাঁচাতে দেশে ইমডেমনিটি অর্ডিনেন্স জারি করেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর রাষ্ট্রপতি হওয়া খন্দকার মোশতাক আহমেদ। ১৯৭৯ সালে এই অর্ডিনেন্সকে আইনে পরিণত করেন তৎকালীন সামরিক শাসক জিয়ারউর রহমান।
বঙ্গবন্ধু হত্যার ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ, প্রধানমন্ত্রী হন তার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা। সে সময় এই ইনডেমনিটি অ্যাক্ট বাতিল করা হলে হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়। ২০১০ সালে দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে হত্যা মামলার ১২ আসামীর মধ্যে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। ২০২০ সালে কার্যকর করা হয় আরো একজনের দণ্ড। বাকীরা এখনও পলাতক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে অনেকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা বলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আমরা এর বিচারও চাইতে পারিনি। এ হত্যায় যারা বেনিফিসিয়ারি তারাই যারা পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল এবং এ হত্যাকাণ্ডের আলামত নষ্ট করেছে।’
‘খুনিরা মনে করেছিল, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা থমকে যাবে। এ কারণে তারা হত্যায় জড়িতেদের আড়াল করতে চেষ্টা করেছিল।’
এ সময় টিকা নিয়ে বিএনপি নেতাদের সমালোচনারও জবাব দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আগামী সাত থেকে ১৪ আগস্ট সারাদেশে গণটিকা কর্মসূচি পালিত হবে। এ কার্যক্রম সফল করতে ১৪ হাজার কেন্দ্রে এক কোটি টিকা দেয়া হবে। টিকা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।’
‘এই বছরের মধ্যে ১০ কোটি মানুষকে টিকা দিতে জননেত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা আমদানি প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছেন। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো সরকারের পক্ষে করোনা মোকাবেলায় একের পর এক কর্মকাণ্ড সরকার সুচারুভাবে সম্পন্ন করলেও বিএনপির মিথ্যাচার চলছেই।’