১৯৭৫ সালের জুলাইয়ের শেষে জার্মানি যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে পরিবারের সদস্যদের বিদায় জানালেও ফিরে এসে তাদের না পাওয়ার স্মৃতি এখনও পোড়ায় বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনাকে।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের স্মৃতিচারণা করেন সরকারপ্রধান।
স্মৃতিকাতর শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পর মাত্র সাড়ে ৩ বছরে যখন আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন স্বাধীনতাবিরোধী, পরাজিত শক্তির দোসর এবং কিছু বেইমান মুনাফেকের চক্রান্তে ১৫ আগস্ট তাকে (বঙ্গবন্ধু) হত্যা করা হয়। আর সেই থেকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সব আদর্শকে জলাঞ্জলি দেয়া হয়।’
‘আমি, আমার ছোট বোন বিদেশে ছিলাম। জুলাই মাসের ৩১ তারিখ আমরা জার্মানিতে পৌঁছাই। বেঁচে গিয়েছিলাম কিন্তু দেশে আসতে পারিনি। তখনকার মিলিটারি ডিক্টেটর আমাকে আসতে দেয়নি। আমার অবর্তমানে আমার দল আমাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করে। আমার দল, সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষ, তাদেরই আহ্বানে আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি।’
তবে ফিরে আসার পথ মসৃণ ছিল না বলেও জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারণ মিলিটারি ডিক্টেটর যিনি তখন ছিলেন অনেকভাবে বাধা দেয়া চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেদিন আমি দেখেছিলাম হাজার হাজার মানুষ।’
‘আমি যখন বাংলাদেশ থেকে যাই, তখন বিমানবন্দরে আমার ভাইবোন ওরাই ছিল। কিন্তু যখন ফিরে আসি তখন হাজার মানুষ পেয়েছি। কিন্তু সেই চেনা মুখগুলো আর পাইনি। পেয়েছি আমার দলের লোকেরা, সমর্থকরা এবং অগণিত সাধারণ মানুষ।’
জাতির পিতার অপূর্ণ স্বপ্ন পূরণকেই নিজের পাথেয় হিসেবে নেয়ার কথা তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি বলেন, ‘আমি সেখানেই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, তাদের বলেছিলাম জাতির পিতা যে আদর্শ নিয়ে এ দেশ স্বাধীন করেছিলেন, আমরা সেটা বাস্তবায়ন করব।
‘তাই আমরা যখন ২১ বছর পর প্রথম সরকার গঠন করি, আমাদের একটাই চিন্তা তৃণমূলে পড়ে থাকা মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা, তাদের জীবনমান উন্নত করা, তাদের একটু সুস্থ জীবন দেয়া, উন্নত জীবন দেয়া। যে মৌলিক চাহিদাগুলোর কথা আমাদের সংবিধানে দেয়া হয়েছে সেগুলো পূরণ করা। সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’