বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বঙ্গবন্ধুর খুনিরা দেশের নাম বদলাতে চেয়েছিল

  •    
  • ১ আগস্ট, ২০২১ ১২:১৬

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা শেখ মুজিবকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল একটাই; বাংলাদেশের অভ্যুদয়কে ধ্বংস করা, বিজয়কে নস্যাৎ করা। তাই সে হত্যাকাণ্ডের পরপর বাংলাদেশের নাম মুক্তিযুদ্ধের সময় যেটা দেয়া হয়েছিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ, সেই বাংলাদেশের নাম পাল্টে ইসলামিক রাষ্ট্র বাংলাদেশ করা হয়েছিল। যদিও সেটা টেকাতে পারেনি।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিরা বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করতে চেয়েছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে কৃষক লীগের আয়োজনে রোববার সকালে রক্তদান কর্মসূচিতে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা জানান।

শোকের মাস আগস্টের শুরু উপলক্ষে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা শেখ মুজিবকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল একটাই; বাংলাদেশের অভ্যুদয়কে ধ্বংস করা, বিজয়কে নস্যাৎ করা। তাই সে হত্যাকাণ্ডের পরপর বাংলাদেশের নাম মুক্তিযুদ্ধের সময় যেটা দেয়া হয়েছিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ, সেই বাংলাদেশের নাম পাল্টে ইসলামিক রাষ্ট্র বাংলাদেশ করা হয়েছিল। যদিও সেটা টেকাতে পারেনি।

‘রেডিওতে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেয়নি। বাংলাদেশ বেতারের নাম পরিবর্তন করে রেডিও বাংলাদেশ, ঠিক পাকিস্তানে যেমন ছিল প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিক সেভাবে করা হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘শুধু যে রাষ্ট্রপতি হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছিল, তা না; একটি আদর্শকে হত্যা করা, একটি বিজয়কে নস্যাৎ করা এবং একটি জাতিকে জাতি হিসেবে মর্যাদা পাওয়ার যে সুযোগ, সেটাকে ধ্বংস করে দেয়া।

‘এটাই ছিল ঘাতকদের প্রচেষ্টা। ক্ষমতা দখলের জন্য শুধু রাষ্ট্রপতিকেই হত্যা করেনি, জাতির পিতার কেউ যেন আর কখনো আর এ দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ না পারে, তাই পরিবারের অন্যদেরও হত্যা করা হয়।’

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একদল বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে সপরিবারে নিহত হন বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকে দিনটিকে শোক দিবস ঘোষণা করে তা রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়ে আসছে।

সেই সঙ্গে আগস্ট মাসকে শোকের মাস হিসেবে পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।

‘অবাক লাগে, আমাদের যারা তারা কীভাবে জড়িত’

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পেছনে আওয়ামী লীগের যারা ইন্ধন দিয়েছে তারা কীভাবে এর সঙ্গে জড়িয়েছিলেন সে হিসেবে মেলাতে পারেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কৃষক লীগের কর্মসূচিতে তিনি বলেন, ‘আমার এটিই অবাক লাগে, এর সাথে আমাদের যারা তারা কীভাবে জড়িত থাকে?

‘হত্যার বিচার করেছি। কিন্তু ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা সেটা এখনও আবিষ্কার হয়নি। একদিন না একদিন আবিষ্কার হবে, এটা ঠিক।’

জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নকেই এখন প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে বলে জানান সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘আর সবচেয়ে বড় কাজ হলো এই দেশটাকে নিয়ে, মানুষকে নিয়ে জাতির পিতা শেখ মুজিব যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, দেশের মানুষের উন্নয়নে সেটাকেই আমি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছি।

‘আমার প্রথম কাজ হচ্ছে এই ক্ষুধার্ত, দরিদ্র মানুষগুলির ভাগ্য পরিবর্তন করে তাদের জীবনমান উন্নত করা।’

‘বাঙালির বিজয় মানতে না পেরেই হত্যা’

পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী কখনোই বাঙালির বিজয় মেনে নিতে পারেনি। আর এ কারণেই জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছিল বলে জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা।

তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি শাসকচক্র বা এ দেশেরও কিছু দালালচক্র বা তাদের তোষামোদকারী, পদলেহনকারী কিছু গোষ্ঠী কেন যেন বাঙালির বিজয় কখনোই মেনে নিতে পারেনি।

‘দুঃখজনক হলো নিজের দলের ভেতরে খন্দকার মোশতাক যেমন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, আবার অনেকেই তাদের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। আর এ ঘটনা ঘটাতে হলে যেহেতু সামরিক বাহিনীর কিছু সদস্য, তাদের ব্যবহার করা হয়েছিল। উচ্চ পর্যায়ের কেউ যদি তাদের সাথে না থাকে, এটা কখনো সম্ভব ছিল না।’

হত্যাকাণ্ডের পেছনে জিয়াউর রহমানের ভূমিকাও ছিল বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আর উচ্চ পর্যায়ের কে ছিল, সেটা তো কর্নেল ফারুক আর রশীদ, ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তারা বিবিসিতে যে ইন্টারভিউ দিয়েছিল, সেখানেই তারা বলেছিল জিয়াউর রহমান, যে উপসামরিক প্রধান ছিল, তার সাথে তাদের যোগাযোগ ছিল; সম্পর্ক ছিল এবং সফল হলে সে তাদের পাশে থাকবে এ কথাও দিয়েছিল। সহযোগিতাও করেছিল।

‘কাজেই মোশতাক জিয়ার যে সখ্যতা এবং তাদের যে সম্পৃক্ততা এটা তো স্পষ্ট।’

হত্যাকাণ্ডের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আর আমার ছোট বোন আমরা তখন জার্মানিতে। ৩১ তারিখ আমরা জার্মানিতে পৌঁছাই। ১৫ আগস্ট যখন এ খবর পাই, আমরা তখন ভাবতেই পারিনি।

‘আমার বাবার অগাধ বিশ্বাস ছিল এ দেশের মানুষের প্রতি। তিনি সবসময় বিশ্বাস করতেন বাঙালি কখনো তার গায়ে হাত দিতে পারবে না। আর পাকিস্তানিরা যখন তাকে হত্যার চেষ্টা করেও পারেনি, আর বাঙালিরা কেন মারবে।’

ষড়যন্ত্রের বিষয়ে বঙ্গবন্ধুকে সতর্ক করা হলেও তা বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করেননি বলে জানান তার কন্যা শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘অনেকেই অনেকভাবে তাকে খবর দিয়েছিলেন, বলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তিনি কখনোই বিশ্বাস করেননি। যখনই কোনো সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধান বলেছেন, তিনি একটি কথাই বলেছেন, এরা আমার সন্তানের মতো; আমাকে মারবে না।

‘আর সেই বিশ্বাসে চরম আঘাত দিলো যারা এবং তাকে নির্মমভাবে হত্যা করল, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমরা যারা আপনজন হারিয়েছি, আমাদের কিন্তু বিচার পাওয়ার কোনো অধিকার ছিল না।’

কৃষকদের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু করেছিলেন। কারণ তার লক্ষ্যই ছিল এ দেশের খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো। প্রতিটি মানুষের মাঝে খাদ্য তুলে দেয়া।

‘তিনি বহুমুখী বাধ্যতামূলক গ্রাম সমবায় করে তার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ করে চাষবাস করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদন দুই গুণ, তিন গুণ করে বাংলাদেশের মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তা দেয়া—এটাই ছিল জাতির পিতার লক্ষ্য।’

তিনি বলেন, ‘যার যার জমি থাকবে। কিন্তু কৃষি উৎপাদনটা সমবায়ের মাধ্যমে হবে। উৎপাদিত পণ্যের একটি অংশ এবং লভ্যাংশ পাবে যারা জমির মালিক, যারা শ্রম দেবে এবং যারা সমবায়ের জন্য পাবে। এ রকম একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

‘তিনি জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন এই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটাকে সার্বিক উন্নত করার লক্ষ্য নিয়ে।’

এ বিভাগের আরো খবর