বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শের বৈশ্বিক প্রচার এবং কূটনৈতিক তৎপরতায় দলগত অবদানের জন্য এবার জনপ্রশাসন পদক পেয়েছে প্যারিসের বাংলাদেশ দূতাবাস। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনো বিদেশ মিশন এমন স্বীকৃতি পেল।
জনপ্রশাসন দিবস উপলক্ষে সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দূতাবাস টিমের পক্ষে ফ্রান্সে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এবং ইউনেসকোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি কাজী ইমতিয়াজ হোসেন ওই সম্মাননা-পদক গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক উপস্থিত থেকে ইমতিয়াজ হোসেনসহ বিজয়ী অন্যদের হাতে পদক তুলে দেন। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে দুই দফা তারিখ পরিবর্তনের পরও ২০২০ সালের জনপ্রশাসন পদক বিতরণ সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে সে বছর পদক বিতরণ অনুষ্ঠান স্থগিত করতে হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক উপস্থিত থেকে ইমতিয়াজ হোসেনসহ বিজয়ী অন্যদের হাতে পদক তুলে দেন। ছবি: সংগৃহীত
ফলে আজকের আয়োজনে ২০২০ ও ’২১ সালের বিজয়ী ৩৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির হাতে পুরস্কারটি তুলে দেয়া হয়।
বিজয়ী প্যারিস মিশনের অন্য সদস্যরা হলেন রাজনৈতিকবিষয়ক মিনিস্টার এস এম মাহবুবুল আলম এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি দয়াময়ী চক্রবর্তী ও নির্ঝর অধিকারী।
জনপ্রশাসন সচিব কে এম আলী আজম জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত দলনেতা হিসেবে পুরস্কারটি গ্রহণ করেছেন। অন্য তিনজন দূতাবাস ও কর্ম সামলাতে ব্যস্ত থাকায় তাদের সম্মাননা ও পদক পৌঁছে দেয়া হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ইউনেসকোতে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শের আন্তর্জাতিকীকরণে দূতাবাস দুটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। যার মধ্যে ছিল- জাতির পিতার নামে সৃজনশীল অর্থনীতিতে ইউনেসকো-বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তন এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে ইউনেসকোকে সম্পৃক্তকরণ।
দুটি উদ্যোগই ইউনেসকোর মাধ্যমে নিয়োগকৃত বিশেষজ্ঞ এবং প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী ও সাধারণ পরিষদের একাধিক পর্যায়ে যাচাই করা হয়েছে। উদ্যোগ দুটি ইউনেসকো প্রতিনিধিত্বকারী তালিকাসমূহে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
এটাকে বাংলাদেশের অসামান্য অর্জন বলে মনে করছে মন্ত্রণালয় সূত্র। উল্লেখ্য, এর আগে বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় বাংলাদেশের তিনটি নিদর্শন, বিশ্ব অপরিমেয় ঐতিহ্য তালিকায় চারটি ঐতিহ্য এবং মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ অন্তর্ভুক্ত হওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্ব স্বীকৃতি পেয়েছে।
জনপ্রশাসনের মেধা, মননশীলতা, সৃজনশীল কর্ম ও উদ্ভাবনী প্রয়াসকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে কর্মস্পৃহা ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জনপ্রশাসন পদক দেয়া হচ্ছে ২০১৬ সাল থেকে।
ওই বছরে ২৬ ব্যক্তি এবং চার প্রতিষ্ঠান প্রথমবারের মতো তাদের কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ওই পদক পেয়েছেন।
দ্বিতীয় বছরে ৩৯ ব্যক্তি এবং একটি প্রতিষ্ঠান, তৃতীয় বছর (২০১৮ সালে) ৩৯ ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠান এবং ২০১৯ সালে ৪৫ ব্যক্তি এবং দুটি প্রতিষ্ঠান তাদের কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন ওই পদক।