কঠোর বিধিনিষেধেও ঈদের পর ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ ছিল মাদারীপুরের বাংলাবাজার ফেরিঘাটে। তবে মঙ্গলবার দেখা গেছে, এ নৌপথের মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে বেড়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী যাত্রী।
এতে এই নৌপথের দুই ঘাটেই যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ছিল সকাল থেকে।
শিমুলিয়া ঘাটে সকালে দেখা গেছে, প্রতিটি ফেরি শ শ যাত্রী নিয়ে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। যাত্রীদের পাশাপাশি ফেরিতে উঠছে মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি। আবার বাংলাবাজার থেকে যাত্রীবোঝাই ফেরি এ ঘাটে এসে ভিড়ছে। তারা ঘাটে নেমে গণপরিবহন না পেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছে। সব মিলিয়ে এ ঘাটে দুুপুর ১২টা পর্যন্ত জটলা ছিল।
লকডাউন বাস্তবায়নে ও ফেরিতে যাত্রী চলাচল নিয়ন্ত্রণে ঘাট অভিমুখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেকপোস্ট থাকলেও যাত্রীরা তা পার করে অনায়াসেই ঘাটে ভিড়ছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডাব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. ফয়সাল জানান, এই নৌপথে এখন ৮টি ফেরি চলছে। জরুরি ও লকডাউনের আওতার বাইরের যানবাহন পারাপারে এসব ফেরি সচল রাখা হয়েছে। ঘাটে গাড়ির চাপ কম থাকায় কোনো গাড়িকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। তবে যাত্রীরা নানান অজুহাত দেখিয়ে ফেরিতে উঠছেন। তা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
এদিকে, বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসা ঢাকামুখী যাত্রীরা গন্তব্যে যেতে পড়ছেন ভোগান্তিতে। তারা বলছেন, গণপরিবহন না থাকার সুযোগে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলগুলো অতিরিক্ত ভাড়া হাঁকছে। যারা সেই খরচ দিতে পারছেন, তারা এসব যানে চড়ছেন। অন্যরা হেটে রওনা হয়েছেন।
শিমুলিয়া ঘাটের আশপাশে দেখা গেছে স্থানীয় অটোরিকশা চালকদের দৌরাত্ম্য। ছয় থেকে আটজন করে যাত্রী নিয়ে তারা মহাসড়ক হয়ে ঢাকায় পাড়ি দেয়। জনপ্রতি তারা ভাড়া নেয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।
এই চালকরা চেকপোস্ট এড়িয়ে বিভিন্ন অলিগলি ব্যবহার করছেন।
বরিশাল থেকে আসা আসমা বেগম যাবেন রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে। শিমুলিয়া ঘাটে নেমে অটোরিকশা ঠিক করলেন এক হাজার টাকায়। তিনি বলেন, ‘কী করব, ঢাকা যেতে হবে। অতিরিক্ত ভাড়া নিলেও অটোরিকশা ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন নেই। হেঁটে ব্যাগ নিয়ে আর কতদূর যাব।’
আরেক যাত্রী মো. আমিন যাবেন মতিঝিল। তিনি ঠিক করলেন একটি মোটরসাইকেল। চালক বললেন, ভাড়া ৩০০ টাকা। তবে আরেকজন যাত্রী পেলে অর্থাৎ দুই যাত্রী নিয়ে তিনি মহাসড়ক পাড়ি দেবেন।
শিমুলিয়া ঘাটের ট্রাফিক পরিদর্শক হাফিজ আহমেদ জানান, ঘাট এলাকায় একমাত্র বাহন বলতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা অথবা সিএনজিচালিত অটোরিকশাই বেশি। কিছু মোটরসাইকেল আছে। তারা মহাসড়কে না উঠে বিভিন্ন অলিগলি দিয়ে ঢাকা যায়। পুলিশ সদস্যরা গলিতে টহল দেয় না। যানবাহনস্বল্পতার জন্য এই চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন বলে তিনি শুনেছেন।
হাফিজ বলেন, যাত্রীরা গন্তব্যে যেতে মরিয়া। কোনো বাধাই তারা মানেন না। যেকোনো মূল্যেই তারা যাবেন। এই সুযোগ নিচ্ছেন এসব চালক।