কঠোর লকডাউনের চতুর্থ দিনেও রাজধানীতে ফিরছেন অনেকে। ঘাটগুলোতে সোমবারও দেখা গেছে, ফেরি পরিবহন করে নিয়ে আসছে ঢাকামুখী যাত্রীদের।
বাংলাবাজার ঘাটে সোমবার সকালে দেখা যায়, ফেরিতে যাত্রীর চাপে উঠতে পারেনি যানবাহন। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর সংখ্যা কমতে থাকে।
এই নৌপথের মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে বাংলাবাজার থেকে আসা যাত্রীদেরই দেখা গেছে। এই ঘাট থেকে মূলত পণ্যবাহী ও জরুরি যানবাহন ফেরিতে উঠেছে।
শিমুলিয়া ঘাটের ৩ নম্বর রো রো টার্মিনালে দোকানের মালিক ইমরান বলেন, বেচাকিনা একদম কমে গেছে। যাত্রী নাই। এপার থেকে যাত্রী এলে বেচাকেনা হতো। এখন এপার-ওপার যাত্রী কমে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডাব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. ফয়সাল জানান, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে সাতটি ফেরি চলাচল করছে। ঘাটে পারাপারের জন্য কোনো যানবাহন নেই, যাত্রীও নেই।
ফেরিগুলোকে যানবাহনের জন্য শিমুলিয়া ঘাটে বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে বাংলাবাজার থেকে যেসব ফেরি আসছে, তাতে যাত্রী এবং ছোট যানবাহনের চাপ রয়েছে। সকাল ১০টার পর যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে।
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথেও ঢাকামুখী যাত্রী দেখা গেছে সোমবার সকাল থেকে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে বিভিন্ন উপায়ে ভেঙে ভেঙে যাত্রীরা রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে আসছেন। রাজবাড়ী শহর থেকে ঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টেই পুলিশ সদস্যদের টহল দেখা গেছে। তার মধ্যেই ঢাকামুখী যাত্রীরা ঘাটে আসছে।
বৃষ্টির মধ্যেই সকাল থেকে কেউ মাথায় পলিথিন মুড়িয়ে হেঁটে, কেউ রিকশা নিয়ে আবার কেউ অটোতে করে ঘাটে আসছেন। তারা এসে সরাসরি ফেরিতে উঠছেন। মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়িও উঠছে ফেরিতে।
ফরিদপুর গোয়ালচামট থেকে আসা মো. ফেরদৌস বলেন, ‘ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করি। অফিস খুলে দিয়েছে। এখন চাকরি বাঁচাতে যেমন করেই হোক যেতেই হবে। ঢাকায় পৌঁছানো তো অনেক কষ্ট হচ্ছে। ভাড়াও দিচ্ছি কয়েক গুন করে বেশি।’
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, দুই ঘাটে ছোটবড় মিলিয়ে ৮টি ফেরি রয়েছে। একটি মাঝারি আকারের ভিআইপি ফেরি রাখা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এলে তাদের পার করা হবে।
এই নৌপথের মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে নেমে গণপরিবহন না পাওয়ায় দৌলতদিয়া থেকে আসা যাত্রীদের অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। এ কারণে সে ঘাটে সোমবার সকালে কিছু জটলা দেখা গেছে।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা মেনেই পাটুরিয়া থেকে ফেরি চলাচল করছে। জরুরি কাজে নিয়োজিত যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। তবে জরুরি কাজের যানবাহন ফেরিতে ওঠার সময় কিছু যাত্রী পার হচ্ছে। যাত্রীরা আমাদের কথা শোনে না।
‘দৌলতদিয়া থেকে ছেড়ে আসা বেশির ভাগ ফেরিতে যাত্রীদের ভিড় থাকে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কেন যাত্রী পার করছে, এটা দৌলতদিয়ার লোকজন বলতে পারবে।’