দেশজুড়ে কঠোর শাটডাউনের তৃতীয় দিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে হেঁটে ঢাকায় ঢুকতে দেখা গেছে যাত্রীদের। এই দফার শাটডাউন শুরুর পর প্রথম কর্মদিবসে রোববার এই মহাসড়কে বেড়েছে যাত্রীর চলাচল।
মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের অংশে কঠোর অবস্থানে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যারা যানবাহন নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছেন, তাদের আটক করে মামলা দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা।
বিনা কারণে যারা সড়কে অবস্থান করছেন, তাদের জরিমানা করছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এই মহাসড়কের ২২টি অংশে পুলিশের চেকপোস্ট রয়েছে। সড়কগুলোতে রয়েছে পুলিশের ২৯টি ভ্রাম্যমাণ দল।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, শিমরাইল, মদনপুর পর্যন্ত ছোট যানে করে আসছেন বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ। পরিবহন না পেয়ে হেঁটে তারা ঢাকার দিকে যাচ্ছেন।
নরসিংদী থেকে এসে রাজধানীর ফার্মগেট যাবেন ইসলাম মিয়া। সেখানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তিনি চাকরি করেন। তিনি বলেন, ‘বাড়ি থেকে ইজিবাইক, অটোরিকশায় করে মদনপুর পর্যন্ত আসার পর এখান থেকে হেঁটেই ঢাকার দিকে যাচ্ছি। কারণ সামনে পুলিশের চেকপোস্ট। তাই ছোট গাড়ি যায় না।’
কুমিল্লা থেকে দুই মেয়েকে নিয়ে যাত্রাবাড়ীতে যাচ্ছেন সেলিনা বেগম। সাইনবোর্ড এলাকায় তার সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার। তিনি বলেন, ‘অটোরিকশায় করে বেশি ভাড়া দিয়ে শিমরাইল পর্যন্ত আসছি। সেখান থেকে হেঁটে রওনা হয়েছি। মা অসুস্থ, তাই তার কাছে যেতেই হবে।’
রাজধানীর একটি ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, তিনি চাঁদপুরের কচুয়া থেকে ছোট যানে করে শিমরাইল পর্যন্ত এসেছেন। সেখান থেকে হেঁটে ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন।
রাস্তায় কোথাও বাধা পেয়েছেন কি না, জানতে চাইলে কামরুল বলেন, ‘প্রথম কর্মদিবস আজ, কিন্তু এখনও যেতে পারিনি। রাস্তায় কোনো যানবাহন না পেয়ে রিকশা, ভ্যান যখন যা পেয়েছি তা-ই নিয়ে রওনা হয়েছি। পথে অনেকবার পুলিশ ধরছে। কিন্তু সঙ্গে কার্ড ছিল, তাই যেতে দিয়েছে।’
হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক (শিমরাইল) মশিউর আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যাত্রীবাহী গাড়ি নেই। শুধু খাদ্যবাহী গাড়ি মহাসড়কে চলাচল করছে। তবে কিছু ছোট যান চলাচল করছে। আমরা ওই সব ছোট যান নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি।
‘মানুষ নানা অজুহাতে মহাসড়ক দিয়ে গাড়ি না পেয়ে হেঁটে ঢাকার দিকে যাচ্ছেন। আমরা তাদের ফিরে যেতে অনুরোধ করছি। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও সড়কে অবস্থান করছেন।’
ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও উপজেলা মিলিয়ে ২৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাটডাউন বাস্তবায়নে কাজ করছেন। পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরাও টহলে আছেন।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যাদব সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মহাসড়ক দিয়ে আসা প্রতিটি গাড়িকে আমরা আটক করছি। জরুরি প্রয়োজন ও খাদ্য সরবরাহে ব্যবহৃত গাড়ি যেতে দেয়া হচ্ছে। বিদেশগামী মানুষের গাড়ি রয়েছে।
‘তবে অধিকাংশ মানুষ যানবাহন না থাকায় হেঁটে ঢাকার দিকে যাচ্ছেন। যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না ও মাস্ক ছাড়া রাস্তায় নেমেছেন, আমরা তাদের জরিমানা করছি।’