শোক দিবস সামনে রেখে সীমিত পরিসরে দলীয় কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
শনিবার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবনে শোকের মাস আগস্টে দলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এ সময় কাদের বলেন, ‘বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে শোকাবহ, মর্মান্তিক হত্যার স্মৃতিবিজড়িত আগস্ট মাস আমাদের দুয়ারে সমাগত।
‘প্রতিবছর আগস্ট মাসে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি পালন করা হয়, কিন্তু এবার করোনার ভয়াবহতায় লকডাউনের কারণে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে আগস্টের কর্মসূচি সীমিত পরিসরে এবং কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের জানান, আগামী ৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডির আবাহনী ক্লাবে তার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন এবং সকাল সোয়া ৯টায় বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিনে সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
শনিবার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সরকারি বাসভবনে শোকের মাস আগস্টের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ফাইল ছবি
১৫ আগস্ট শোক দিবসে সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে আওয়ামী লীগ। ওই দিন সকাল সোয়া ৯টায় বনানী কবরস্থানেও জানানো হবে শ্রদ্ধা। এ ছাড়া বেলা ১১টায় আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে।
শোক দিবসের দিন দেশের সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। পরের দিন অর্থাৎ ১৬ আগস্ট বেলা সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা।
এ ছাড়া ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবসে সকাল ৯টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। ২১ আগস্ট বেলা সাড়ে ৩টায় ঘরোয়াভাবে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা।
এর বাইরে ২৭ আগস্ট জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ প্রাঙ্গণে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে আওয়ামী লীগ।
এসব কর্মসূচিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক পরিধান করে সীমিত পরিসরে কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সাংগঠনিক ইউনিটগুলোকে দলের সভাপতির পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘সংক্রমণের উচ্চমাত্রার বিষয়টি মাথায় রেখে এবং কর্মসূচির ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে ঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে হবে।’
পাশাপাশি সব সহযোগী সংগঠনকেও এ কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় করে নিজস্ব কর্মসূচি পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
এ সময় করোনার সংক্রমণ রোধে প্রতিরোধব্যবস্থাকে জোরদার করার পাশাপাশি পূর্ণ সতর্কতা বজায় রেখে চলমান বিধিনিষেধ প্রতিপালন করে সংক্রমণের উচ্চমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, ‘লকডাউনে খেটে খাওয়া মানুষের জীবনের অনিশ্চয়তা বেড়ে যায়। তবু জীবনের সুরক্ষার প্রয়োজনে জনস্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
‘আমাদের উদাসীনতায় লাগামহীনভাবে সংক্রমণ বাড়তে থাকলে ভয়ানক অবস্থা তৈরি হতে পারে। তাই জনস্বার্থে এবং জনজীবনের সুরক্ষায় শেখ হাসিনা সরকার এই কঠোর বিধিনিষেধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
কাদের বলেন, ‘জীবনের প্রয়োজনে বা বেঁচে থাকার প্রয়োজনে সবাইকে ত্যাগ স্বীকার করে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করতে হবে। অহেতুক কেউ বাইরে বের হবেন না।
‘শতভাগ মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে বিধিনিষেধের প্রয়োজন হতো না কিন্তু কারো কারো উদাসীনতা এবং ঝুঁকি তোয়াক্কা না করে চলাফেরার কারণে সংক্রমণ পেয়েছে ঊর্ধ্বগতি।’
সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি চলমান লকডাউনে কর্মহীন ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান জ্যেষ্ঠ এই নেতা।