কাগজকলমে বর্ষাকাল চললেও দেশে তেমন বৃষ্টির দেখা নেই কয়েক দিন। এর মধ্যে সক্রিয় হতে শুরু করেছে মৌসুমি বায়ু। সেই সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে লঘুচাপ।
আবহাওয়া অফিস বলছে, উপকূলে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে চলছে; সারা দেশে বৃষ্টি হবে। এ জন্য উপকূলে ৩ নম্বর ও নদীবন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্কতাসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঈদের আগেই আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছিল ২৩ জুলাইয়ের পর সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হবে, যার প্রভাবে সারা দেশে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এরই মধ্যে শনিবার সকাল ১০টার পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আব্দুল হামিদ নিউজবাংলাকে বলেন, লঘুচাপটি এখন সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি এখন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে। সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে ঝাড়খন্ড, তৎসংলগ্ন উত্তর ছত্রিশঘর ও ওড়িশায় অবস্থান করছে।
এই লঘুচাপে বাংলাদেশে কেমন প্রভাব রয়েছে জানতে চাইলে আবদুল হামিদ বলেন, ‘দেশে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য রয়েছে। সমুদ্রে বজ্রসহ মেঘের আধিক্য থাকায় আমরা সেখানে ৩ নম্বর সতর্কতাসংকেত বহাল রেখেছি। উপকূলে যথেষ্ট বাতাস আছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে সক্রিয় আছে। আর উত্তর অঞ্চলে মোটামুটি সক্রিয়।’
এই আবহাওয়াবিদ জানালেন, শনিবার রাজধানীসহ সারা দেশে আরও বৃষ্টি হবে। রোববার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ ফের কমে আসতে পারে।
তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি আজ থাকবে। রোববার দুপুরের পর থেকে একটু কমে আসবে। লঘু চাপের প্রভাব আজ কাল থেকে কমে যাবে আবার।’
সামুদ্রিক সতর্কতাবার্তায় বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে এবং গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্রবন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর সতর্কতাসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
নদীবন্দরগুলোর জন্য এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও কক্সবাজার অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য এসব এলাকার বন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কতাসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের শনিবারের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে অসম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ওপর সক্রিয় এবং দেশের অন্যত্র মোটামুটি সক্রিয় মৌসুমি বায়ু উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে।
খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ছোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।