শাডডাউনে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকার মধ্যেও নীলফামারীর সৈয়দপুর থেকে ঢাকামুখী ফ্লাইটে ২১ যাত্রীর কাছে টিকিট বিক্রি করেছে বেসরকারি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। কিন্তু যাত্রীদের বিমানবন্দরেই ঢুকতে দেয়া হয়নি। আর নানা হাঙ্গামার পর ফিরে যান তারা।
শুক্রবার বিকেলে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঢাকায় আসতে ফ্লাইটে উঠতে আন্দোলন করেও কোনো লাভ হয়নি। পুলিশ এসে বিমানবন্দরছাড়া করে তাদের।
সরকারঘোষিত ১৪ দিনের ‘সবচেয়ে কঠোর’ লকডাউনে অন্য সব গণপরিবহনের মতো বন্ধ রয়েছে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটও। আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত থাকছে এই ব্যবস্থা।
শুধু বিদেশগামীদের জন্য অভ্যন্তরীণ রুটে সীমিতসংখ্যক কানেক্টিং ফ্লাইট চালাচ্ছে দেশি এয়ারলাইনগুলো। এই ফ্লাইটে তারাই টিকিট পাবেন যাদের কাছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের টিকিট রয়েছে। আর এই ফ্লাইটেই অভ্যন্তরীণ রুটের টিকিট বিক্রি করেছিল ইউএস-বাংলা।
সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সুপ্লব সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যাত্রীরা বলেছেন তারা অনলাইনে টিকিট কেটেছেন। কিন্তু তাদের কাছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের কোনো টিকিট ছিল না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাদের বিমানবন্দরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। যেহেতু তারা আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রী নন, তারা চাইলেই ঢাকা যেতে পারবেন না।’
তারা কীভাবে টিকিট কাটলেন ইউএস-বাংলার কার্যালয় থেকে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ওয়েবসাইটে শুধু বিদেশগামীদের জন্য টিকিট বিক্রির কথা বলা হয়েছে। এটি আমাকে তারা দেখিয়েছেও। হয়তো অসচেতনতা বা না জানার কারণে তারা টিকিট কেটেছিলেন।’
বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে না পেরে পরে সেখানেই বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পরে ডাকা হয় পুলিশ সদস্যদের। পুলিশ এলে যাত্রীরা বিমানবন্দর ছাড়েন।
দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ রুখতে গত ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। এ সময় অফিস-আদালতসহ সড়কে সব ধরনের যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। ঈদ সামনে রেখে ১৫ জুলাই থেকে আট দিনের জন্য বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকার। এ সময় অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়। কিন্তু শুক্রবার থেকে ১৪ দিনের জন্য আবার কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে যায় দেশ। বন্ধ রাখা হয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও অভ্যন্তরীণ রুটের টিকিট বিক্রির কারণ জানতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের সৈয়দপুর বিমানবন্দর কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে স্টেশন ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে একজন বলেন, ‘আমি ছুটিতে আছি। এ বিষয়ে কিছু জানি না।’
ইউএস বাংলা এয়ারের জনসংযোগ ও বিপনণ বিভাগের মহাপরিচালক কামরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের টিকিট না থাকলে কেউই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ভ্রমণ করতে পারবে না, এটা আমরা বারবার আমাদের যাত্রীদের জানিয়ে আসছি।
‘আমরা সারা বছরের টিকিট বিক্রিই চালু রেখেছি, কারণ আমরা তো নিশ্চিতভাবে জানি না যে কখন ফ্লাইট চালু বা বন্ধের সিদ্ধান্ত আসবে। কিন্তু এক্ষেত্রে যাত্রীরা চাইলেই কিন্তু রিফান্ড বা রিসিডিউল করার সুযোগ পাচ্ছেন। আমি যতটুকু বুঝতে পারছি, এই যাত্রীরা লকডাউনের সিদ্ধান্ত হওয়ার আগেই টিকিট কেটেছিলেন।’