নিজের জায়নামাজ সঙ্গে নিয়ে মসজিদে এসে শুধু ফরজ নামাজ আদায়ের বিধান রেখে চলমান শাটডাউনে মুসল্লিদের জন্য ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। সুন্নত ও নফল নামাজ ঘরে পড়তে বলা হয়েছে।
অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা উপাসনালয়ে প্রবেশের সময় মাস্ক পরা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়াসহ যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বলেও জানানো হয়েছে।
নির্দেশনা অমান্য করা হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও হঁশিয়ার করেছে সরকার।
শুক্রবার এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ছড়িয়ে পড়া রোধে গত ১ জুলাই থেকে যে শাটডাউন দেয়া হয়, তখনও মসজিদে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে এই ধরনের নির্দেশনাগুলো দেয়া হয়।
তবে ঈদ উপলক্ষে ১৫ থেকে ২২ জুলাই বিধিনিষেধ শিথিল করা হলেও উন্মুক্ত ময়দানে ঈদের জামাতে নিষেধাজ্ঞা থাকে। জামাত হয় কেবল মসজিদে। তাও দূরত্ব বজায় রেখে।
তবে শুক্রবার ভোর থেকে আবারও বিধিনিষেধ ফিরে এসেছে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়ায় কেবল রাজধানীতে প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে চার শতাধিক। এর মধ্যে মসজিদকেন্দ্রিক নির্দেশনাটি পাঠানো হয় গণমাধ্যমে।
নির্দেশনায় যা থাকছে:
# মসজিদের ঢোকার মুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান পানি রাখতে হবে এবং মুসল্লিদেরকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে।
# নিজ নিজ বাসা থেকে ওযু করে, সুন্নত ও নফল নামাজ ঘরে আদায় করে কেবল ফরজ নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়া যাবে এবং ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
# মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক নিয়ে পরিস্কার করতে হবে, মুসল্লিগণ প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে।
# কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
# শিশু, বয়োবৃদ্ধ, অসুস্থ ব্যক্তি ও অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
# সংক্রমণরোধে মসজিদের ওযুখানায় সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।
# সবার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
# করোনা মহামারির এ বৈশ্বিক মহাবিপদ হতে রক্ষা পেতে বেশি বেশি তওবা, আস্তাগফিরুল্লাহ ও কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে এবং অন্যায়-অপরাধের জন্য নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন বলেও নির্দেশনায় বলা হয়।
এ ছাড়া অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা উপাসনালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে মাস্ক পরা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়াসহ যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এসব নির্দেশনা মানা না হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে সরকারের দেয়া এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে।