ঈদ করে আর দেরি নেই। শুক্রবার থেকে কঠোর শাটডাউন শুরু হবে বলে ঈদের পরদিনই রাজধানী ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। অনেকে আবার শাটডাউনে বাড়িতে কাটাবে বলে বৃহস্পতিবার ছাড়ছে ঢাকা। দুইমুখী যাত্রীদের বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে দেখা গেছে ভিড়।
বিআইডাব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা পারাপারের অপেক্ষায় শিমুলিয়া ঘাটে ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী প্রায় ৫০০ বেশি গাড়ি আছে। তবে লঞ্চে যাত্রীর চাপ কিছুটা কম। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও শিমুলিয়া-মাজিরকান্দি নৌরুটে ৮৪টি লঞ্চ চলাচল করছে।
ঢাকার মিরপুরে পরিবার নিয়ে থাকা বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত আফজাল হোসেন ঈদ করতে খুলনা গিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘লকডাউনের কারণে ফ্যামিলির সবাইকে রেখে আসছি। ঢাকায় ঢুকতে হবে ব্যাংক খোলা।’
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সেলিনা আফরোজ বলেন, ‘সপরিবারে ঈদ করতে গিয়েছিলেন বাগেরহাটে। কোরবানি উপলক্ষে প্রতিবছর যাই। লকডাউনের কারণে তড়িঘড়ি করে ঢাকার জিগাতলা ফিরছি।’
বিআইডাব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বানিজ্য) ফয়সাল আহমেদ জানান, পদ্মায় তীব্র স্রোতে নৌরুটে ফেরি চলাচলে বেশি সময় আর ঘাটে থাকা যানবাহন পারাপারে বেগ পেতে হচ্ছে। নৌরুটে বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৫টি ফেরি সচল রয়েছে। ঘাট এলাকায় পারাপারের জন্য প্রায় ৫০০ যানবাহন রয়েছে। সকাল থেকে যাত্রী এবং মোটরসাইকেল চাপ রয়েছে ফেরিগুলোতে।
এদিকে পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্রোতের তীব্রতা বেড়েছে। যার ফলে বাংলাবাজার ঘাটে ব্যহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। স্রোত উপক্ষো করে চলাচল করতে না পারায় বন্ধ রাখা হয়েছে ৩টি ছোট ফেরি। সকাল থেকে ৬ টি কে-টাইপ ও ৪ টি ডাম্পসহ মোট ১৪ টি ফেরি চলাচল করছে।
এছাড়াও মূল পদ্মা থেকে চ্যানেলে প্রবেশের পথে তীব্র স্রোতের মুখে পড়ায় ফেরিগুলো ঘাটে পৌঁছাতে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট বেশি সময় লাগছে।
বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার লঞ্চঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, ঘাটে সকাল থেকে ঢাকামুখী যাত্রীদের কোনো চাপ নেই। তবে ঘরমুখী যাত্রীদের ভিড় রয়েছে। কাল থেকে আবারও কঠোর লকডাউন হওয়ায় দুপুরের পর থেকে কর্মমুখী মানুষের ভিড় বাড়ার সম্ভবনাও বেশি।
অন্যদিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ফেরি ও লঞ্চ ঘাটে দেখা দিয়েছে ফিরতি মানুষের চাপ। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে ঘাট এলাকায় দেখা গেছে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। পারাপারের অপেক্ষায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও চালকদের।
পাটুরিয়ায় ফেরি ও লঞ্চ ঘাটে ফিরতি মানুষের চাপ দেখা গেছে। ছবি: নিউজবাংলাবাংলাদেশ অভ্যান্তরিন নৌপরিবহন কর্পোরেশ (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগে ও পরে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী ৩০০ বেশি যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জিল্লুর রহমান বলেন, ‘২৩ জুলাই থেকে সারাদেশে আবারও কঠোর লকডাউন দেয়ায় দক্ষিণ পশ্চিাঞ্চলের কর্মজীবী মানুষ ফিরতে শুরু করেছেন। এতে ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়ছে। তবে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি নেই।’
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ১৬টি ফেরি দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। তবে নদীতে তীব্র স্রোত থাকার কারণে কিছুটা ব্যহত হচ্ছে ফেরি চলাচল।