ঈদযাত্রায় যানজটে ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে এই ভোগান্তির জন্য তিনি সড়কে নির্মাণকাজ চলা, বৃষ্টি ও কোরবানির পশুবাহী গাড়ির আধিক্যকেও দায়ী করেছেন।
ঈদের আগে আগে বিশেষ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি আটকে থাকার মধ্যেই রাজধানীর সরকারি বাসভবন থেকে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে আসেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মহাসড়ক কোনো সমস্যা নয়, সমস্যা হচ্ছে পরিবহন ব্যবস্থাপনা। পাশাপাশি যারা ঈদযাত্রায় ভোগান্তির মুখে পড়েছেন তাদের প্রতি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
সোমবার থেকে গাড়ির চাপে ঢাকা থেকে বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও উত্তরাঞ্চলের পথের যাত্রীদের গাজীপুর চৌরাস্তা পার হতেই আট থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লেগে গেছে।
বাড়ি ফেরা মানুষের চাপে এই মহাসড়কে যানজট কোনো ঘটনা না হলেও এবার করোনাকালে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটি নজিরবিহীন।
যানজট দেখা গিয়েছে গাবতলী থেকে সাভার হয়ে টাঙ্গাইল ও আরিচা মহাসড়কেও। তবে গাজীপুরের মতো অতটা তীব্র ছিল না। আর চার লেন হয়ে যাওয়ার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম আর ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পরিস্থিতি অনেকটাই সহনীয়।
গাজীপুর পুলিশের কর্মকর্তাদের মূল্যায়ন বলছে, বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটির কাজ চলার কারণে স্বাভাবিক যান চলাচলে ব্যাঘাতের পাশাপাশি মহাসড়কে গণপরিবহনের পাশাপাশি পণ্যবাহী ট্রাক ও পশুবাহী গাড়ির একসঙ্গে চলাচল, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচলের সরকারি নির্দেশ, দেরিতে পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত, শেষ সময়ে অফিস, পোশাক কারখানা ছুটি এবং লকডাউন শিথিলের ঘোষণার বিষয়টি উঠে এসেছে।
কখনও সড়কের একপাশে কখনও উভয় পাশে থেমে থাকে গাড়ির চাকা
তবে সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের ব্যাখ্যায় কাদের বলেন, ‘বৃষ্টি এবং কোরবানির পশুবাহী গাড়ির ধীরগতির কারণে, ঢাকা-গাজীপুরে নির্মাণকাজের কারণে এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যাত্রীদের কিছু জায়গায় ভোগান্তি হয়েছে ও হচ্ছে।
‘লকডাউনসহ বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে এবারের ঈদে পণ্যবাহী ট্রাক, লরি এবং কাভার্ডভ্যানসহ সব ধরনের গাড়ি চলাচল করছে, তাই যানবাহনের চাপ বেশি।’
ঈদ আনন্দ যেন বিষাদে রূপ নিতে না পারে
করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণের মধ্যে বাড়িমুখী মানুষের ঈদ আনন্দ যেন বিষাদে রূপ না নেয় সে জন্য মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও আহ্বান জানান কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে ঘরমুখী হয়েছেন। করোনা সংক্রমণের উচ্চমাত্রার এমন পরিস্থিতিতে অসতর্ক হলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞগণ সতর্ক করে দিয়েছেন। তাই ঈদ আনন্দ যেন বিষাদে রূপ নিতে না পারে সে জন্য আমি আবারও ঘরমুখী মানুষের প্রতি আকুল আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘একসময় কেউ কেউ বলেছিলেন, গ্রামের মানুষের নাকি করোনা হবে না। কিন্তু সেসব অবৈজ্ঞানিক যুক্তি ভুল প্রমাণ করে গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ। তাই ঈদের এ আনন্দ ভ্রমণ যেন কান্নায় রূপ না নেয়, সে জন্য নিজেকে সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে রাখতে হবে এবং নিজে ও অন্যকে সতর্ক রাখতে হবে।’
শপিং মল, বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল, ট্রেন স্টেশন, ফেরিঘাট, পশুর হাটসহ যেখানে জমসমাগম হতে পারে সেখানে মাস্ক পরা ও ভিড় এড়িয়ে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার কথাও বলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা।