যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি মডার্না উদ্ভাবিত আরও ৩০ লাখ টিকা ঢাকায় আসছে সন্ধ্যায়। এই চালান এলে কোম্পানিটির মোট টিকা দাঁড়াবে ৫৫ লাখ।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেশে পৌঁছবে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করবেন।
এর আগে ২ জুলাই রাতে ১২ লাখ ও ৩ জুলাই রাতে বাংলাদেশে পৌঁছে ১৩ লাখ টিকা। বিশ্বজুড়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে টিকা বিতরণে গড়ে ওঠা জোট কোভ্যাক্স থেকে এই টিকা পাওয়া যাচ্ছে।
এই টিকা হাতে এলে বাংলাদেশের হাতে টিকার সংখ্যা আবার এক কোটি ছাড়িয়ে যাবে। এই মুহূর্তে দেশে চীনের সিনোফার্মের টিকা আছে ৫০ লাখের কাছাকাছি। এ ছাড়া ফাইজার পাঠিয়েছিল আরও এক লাখের মতো টিকা।
মডার্নার টিকার এই চালান এলে কেবল জুলাই মাসে দেশে আসা টিকার সংখ্যা দাঁড়াবে ৯৫ লাখ। আগস্টে আরও এক কোটির বেশি টিকা পাওয়া যাবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে জানিয়েছে একই মন্ত্রণালয়।
চলতি মাসের শুরুতে ২ ও ৩ জুলাই মিলিয়ে মডার্নার ২৫ লাখ টিকা ছাড়াও আসে চীন থেকে কেনা টিকার প্রথম চালানের ২০ লাখ। ১৭ জুলাই রাতে দুই চালানে আসে আরও ২০ লাখ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, সিরাম যে টিকা উৎপাদন করে সেই অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার আরও ১০ লাখ টিকা আসবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আর ২৯ লাখ আসবে জাপান থেকে। চলতি মাসের শেষ দিকে আরও ৫ লাখ টিকা আসবে চীনের সিনোফার্ম থেকে।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে ৫৮ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষকে প্রথম ডোজ দেয়া হলেও সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া যায়নি। অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার এই চালান হাতে এলে প্রথম ডোজ পাওয়া সবাই পাবে দ্বিতীয় ডোজ।
অবশ্য এসব টিকা আসার তারিখ এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
তবে হাতে টিকার মজুত আর সামনে আরও টিকা পাওয়ার কারণেই আবার করোনার গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা সংকটের কারণ দেখিয়ে গত ৫ মে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ও চীনের সিনোফার্ম উদ্ভাবিত টিকা বিবিআইবিপি-করভির ডোজ হাতে আসার পর সরকার তিন শ্রেণির জন্য নিবন্ধন অ্যাপ চালু করে।
গত জানুয়ারিতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা পাঠানো ৫০ লাখ আর উপহারের ৩২ লাখ টিকা হাতে নিয়ে বাংলাদেশ গণটিকা কার্যক্রম শুরু করে গত ৭ ফেব্রুয়ারি। এরপর আসে আরও ২০ লাখ টিকা। কিন্তু ভারতে করোনা ভাইরাসের বিস্তারের কারণে সিরাম ইনস্টিটিউটকে সে দেশের সরকার টিকা রপ্তানি আপাতত বন্ধ রাখতে বলায় প্রতি মাসে ৫০ লাখ টিকা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেনি কোম্পানিটি। সেপ্টেম্বরের আগে সিরামের টিকা পাওয়ার আশা ক্ষীণ।
সিরাম থেকে ধাক্কার পর সরকার চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে। এর মধ্যে চীনের সিনোফার্মের সঙ্গে চুক্তিটি প্রথম কার্যকর হয়। এই কোম্পানির তিন থেকে চার কোটি টিকা সরকার কিনতে চায়।
তবে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ফলে সে দেশের টিকাও এখনও আসেনি।
এই দুটি টিকা আবার দেশেই উৎপাদনের পরিকল্পনা চলছে।
জুলাইয়ের মতো আগস্টেও আসার কথা এক কোটির বেশি টিকা। এর মধ্যে ৬২ লাখ আসবে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে। আর ৫০ লাখ ডোজ আসবে চীন থেকে। সেটাও কোভ্যাক্সের মাধ্যমে।