দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার লোকজন ঈদ করতে ঢাকা ছেড়ে বাড়ির দিকে ছুটছেন। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে ঘরমুখী এই যাত্রীদের ঢল শনিবার ভোর থেকেই।
ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট-বড় যানবাহনে চড়ে ঘাটে আসছেন যাত্রীরা। লঞ্চে-ফেরিতে যে যেভাবে পারছেন উঠছেন।
করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নেয়ার শর্তে গণপরিবহন চালু করা হলেও যাত্রীর চাপে সে নির্দেশ মানা হচ্ছে না। সব লঞ্চেই গাদাগাদি করে উঠছেন মানুষ।
যাত্রীবাহী যান ও যাত্রীদের ভিড় ঠেলে ফেরিতে উঠতে পারছে না পণ্যবাহী যানবাহন। এতে শিমুলিয়া ঘাটের অভিমুখে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের প্রায় সাত কিলোমিটার এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে সকালে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) শিমুলিয়া লঞ্চঘাটের ট্রাফিক কর্মকর্তা সোলেমান জানান, এই নৌপথে এখন ৮৩টি লঞ্চ চলাচল করছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিস) শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী উপমহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম জানান, এই পথে ১৩টি ফেরি সচল রয়েছে। ঘাট এলাকায় পারাপারের জন্য যাত্রী ও পণ্যবাহী মিলিয়ে পাঁচ শরও বেশি যানবাহন অপেক্ষায় আছে। পর্যায়ক্রমে সবগুলোই পারাপার করা হবে।
মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক সিরাজুল কবির বলেন, ‘মানুষের উপচে পড়া ঢল রয়েছে। আমরা সাধ্যমতো নিয়ম মেনে লঞ্চে যাত্রী ওঠানোর চেষ্টা করছি।’
এই ঘাট থেকে যাওয়া যাত্রীরা মাদারীপুরের বাংলাবাজারে নামায় সেখানেও সকাল থেকে তীব্র যানজট লেগে আছে। তবে বাংলাবাজার থেকে ছেড়ে যাওয়া ফেরি ও লঞ্চে তেমন চাপ নেই।
বাংলাবাজার ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, যতগুলো ফেরি শিমুলিয়ার উদ্দেশে যাচ্ছে, সবগুলোতে ব্যক্তিগত দুই থেকে তিনটি ছোট গাড়ি, দুই-তিনটি অ্যাম্বুলেন্স এবং কিছু পণ্য ও পশুবাহী ট্রাক উঠছে।
বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার লঞ্চঘাটের ট্রাফিক পরিদর্শক আক্তার হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রীই পার করা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, মাঝনদীতে একটু স্রোত থাকার কারণে ফেরি চলাচলে বেশি সময় লাগছে। জরুরি পণ্য ও পশু পারাপারের গাড়িগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যাত্রীদের বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন করতে এই ঘাটে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বাড়তি ভাড়া ও ধারণক্ষমতার অর্ধেকের বেশি যাত্রী নেয়ার বিড়ম্বনা বন্ধে ভ্রামমাণ আদালতের টিম রয়েছে। ঘাট এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। সড়কে যানজট এড়াতে ঘাটের অদূরে যাত্রী নামিয়ে দেয়া হচ্ছে।’