বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তালেবানের প্রতি সহানুভূতি তৈরিতে কারা, চলছে নজরদারি

  •    
  • ১৬ জুলাই, ২০২১ ২০:২৯

আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবানের জয়জয়কারের মধ্যে গোটা দক্ষিণ এশিয়াতেই নতুন পরিস্থিতি তৈরি নিয়ে কথা হচ্ছে। ইসলামি শরিয়াভিত্তিক শাসনের অনুসারীরা খুবই উৎফুল্ল এবং তালেবানের জয়ে তারা মানসিকভাবে চাঙা হয়ে আবার অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কাও আছে।

সশস্ত্র জিহাদ ও ইসলামি শাসনকে অপছন্দকারীদের জবাই করার আহ্বান জানানো ধর্মীয় বক্তা মাহমুদ হাসান গুনবীর মতো বক্তারা আফগান সশস্ত্র ধর্মীয় গোষ্ঠী তালেবানের পক্ষে সহানুভূতি তৈরিতে কাজ করছেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

দেশে যেন জঙ্গি উত্থান না হয় সেজন্য কাজ করে যাওয়ার কথা জানিয়ে বহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার মঈন উদ্দিন বলেছেন, ‘আমাদের তৎপরতার কারণে দেশে এখন পর্যন্ত জঙ্গি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেনি দেশে।’

গুনবীকে গত রাতে ঢাকার মিরপুর বেড়িবাঁধ থেকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে বাহিনীটি, যদিও তার পরিবার অভিযোগ করেছে, ১০ দিন আগে নোয়াখালী থেকে তাকে তুলে আনা হয়।

র‌্যাব পরিচালক বলেন, ‘গুনবীর মতো অনেক বক্তা বাংলাদেশে তালেবানপন্থি। তাদের বক্তব্যের কারণে দেশের অনেক যুবকের মধ্যে তালেবানদের বিষয়ে সফট কর্নার তৈরি হচ্ছে।’

আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবানের জয়জয়কারের মধ্যে গোটা দক্ষিণ এশিয়াতেই নতুন পরিস্থিতি তৈরি নিয়ে কথা হচ্ছে। ইসলামি শরিয়াভিত্তিক শাসনের অনুসারীরা খুবই উৎফুল্ল এবং তালেবানের জয়ে তারা মানসিকভাবে চাঙা হয়ে আবার অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কাও আছে।

র‌্যাব পরিচালক বলেন, ‘আফগানিস্তানের চলমান পরিস্থিতির ওপর আমরা নজদারি রাখছি। পাশাপাশি অনলাইনে বিভিন্ন জঙ্গি কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আমরা র‌্যাব সাইবার মনিটরিং সেলের মাধ্যমে নজরদারি রাখছি।’

মাহমুদ হাসান গুনবীকে গ্রেপ্তার করে আইন ও গণমাধ্যম শাখার কার্যালয়ে নিয়ে আসে র‌্যাব

বাংলাদেশ থেকে তালেবানদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে দেশীয় জঙ্গিদের আফগানিস্তানে যাওয়ার কোনো প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতি সময়ে র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আনসার আল ইসলামের জঙ্গিরা সব থেকে বেশি গ্রেপ্তার হচ্ছেন। র‌্যাবও এখন পর্যন্ত ৩৭০ জন আনসার আল ইসলামের জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এখন পর্যন্ত এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি তারা আফগানিস্তানে যাবে বা তালেবানদের সঙ্গে যুক্ত হবে।

‘তবে তাদের মধ্যে উগ্রবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এক শ্রেণির স্কলাররা চেষ্টা করেছেন। এ ধরনের অনেক স্কলারদের আমরা গ্রেপ্তার করেছি এবং তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

গুনবীর মাধ্যমে কত জন আনসার ইসলামে এসেছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘নির্দিষ্ট সংখ্যা জানা যায়নি। তবে দেশের বিভিন্ন জেলায় উগ্রবাদী বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি অনেককে আনসার আল ইসলামে নিয়ে এসেছেন।’

গুনবীর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় ও হামলার পরিকল্পনা ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা দেখেছি তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংগঠনের কাজ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি একটি ইসলামি রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করেছেন। ওই সংগঠনের বিভিন্ন মিটিং বা মাহফিলে যোগদান করলেও তার কোনো সাংগঠনিক পদ ছিল না।’

গ্রেপ্তার জঙ্গি ওসামার সঙ্গে কী ধরনের সংশ্লিষ্টতা আছে- জানতে চাইলে মঈন উদ্দিন বলেন, ‘রাজবাড়ীতে ওসামার যে মাদ্রাসা রয়েছে সেখানে তিনি নিয়মিত মাহফিলে বক্তব্য দিতেন এবং উগ্রবাদী আদর্শ প্রচার করতেন।

‘সেই মাদ্রাসায় তিনি এক জন প্রতিষ্ঠিত উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে এসেছে ওসামা ও সাকিবের যে পরিকল্পনা ছিল সেখানে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল। আর এই হামলার পরিকল্পনায় তার গাইডলাইন ছিল।’

মাহমুদ হাসান গুনবীকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ব্রিফিং করছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার মঈন উদ্দিন

ওসামা ও সাকিব জাতীয় সংসদে তলোয়ার নিয়ে আত্মঘাতী হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

র‌্যাব পরিচালক বলেন, ‘তাদের পরিকল্পনা ছিল সংসদ ভবনের আশেপাশে তারা জমায়েত হয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা করবে। এই পরিকল্পনার সময় গুনবী আত্মগোপনে চলে যায়। তাকে আমরা তখন খুঁজছিলাম জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন ওসামা ও সাকিবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তখনি গুনবীর নাম উঠে আসে।’

গুনবীকে কেন আধ্যাত্মিক নেতা বলা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তিনি (গুনবী) তাদের কাছে আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে পরিচিত। সে বক্তব্যের মাধ্যমে মানুষের মতাদর্শ পরিবর্তন করার একটি ক্ষমতা তার মধ্যে আছে। আনসার আল ইসলামের জঙ্গিদের বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা গুনবীর ওয়াজ মাহফিলে তার উগ্রবাদী মতাদর্শের বক্তব্য শুনে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছেন। এছাড়া গুনবী বিভিন্ন ছোট ছোট গ্রুপকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও রাজবাড়ী মাদ্রাসায় নিয়ে বক্তব্যের তাদের মধ্যে জঙ্গি মতাদর্শ ঢুকাতেন।’

পার্বত্য চট্টগ্রামে গুনবীর কী ধরনের তৎপরতা ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গুনবী যখন ২০০৮ সালে পড়াশোনা শেষ করেন, তখন তিনি বিভিন্ন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন এবং ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য রাখেন। যার অধিকাংশ ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা ও কক্সবাজার জেলা। খাগড়াছড়িতে তার নিজেরও একটি মাদ্রসা আছে। ঐ জায়গাগুলো নিরিবিলি হওয়ায় সেখানে বিভিন্ন গ্রুপকে মনস্তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণ দিতেন গুনবী।’

এ বিভাগের আরো খবর