বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কারখানায় কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে ২৪ সদস্যের কমিটি

  •    
  • ১৫ জুলাই, ২০২১ ২১:০৫

পিএমও জানায়, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নেতৃত্বে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে শিগগিরই সব শিল্প-কলকারখানা সরেজমিনে পরিদর্শন করা হবে।

কল-কারখানা, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনারোধ এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে সভাপতি করে ২৪ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

পিএমও জানায়, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নেতৃত্বে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে শিগগিরই সব শিল্প-কলকারখানা সরেজমিনে পরিদর্শন করা হবে।

গত ৮ জুলাই বৃহস্পতিবার রূপগঞ্জে হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় আগুনে ৫২ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর অভিযোগ ওঠে কারখানাটিতে আগুন নিয়ন্ত্রণে কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। কারখানাটির কর্মপরিবেশ নিয়েও নানা অভিযোগ ওঠে।

দায় এড়াচ্ছে সরকারি সংস্থা

রূপগঞ্জে হাশেম ফুড লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ আগুনের পর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি সংস্থা একে অন্যের ওপর দায় চাপাচ্ছে।

কারখানার নিরাপত্তামান তদারকির দায়িত্বে থাকা এসব সংস্থা বলছে, তাদের কর্মকর্তারা নিয়মিত হাশেম ফুড কারখানাটি পরিদর্শন করেছেন। অথচ এরপরেও সেখানে আগুন নেভানোর সরঞ্জামের অভাবসহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা কেন ছিল, সে বিষয়ে কারও পরিষ্কার ব্যাখ্যা নেই।

রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুড লিমিটেডের কারখানায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে প্রায় ২৯ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ৫২ শ্রমিকের প্রাণহানির তথ্য জানিয়েছে প্রশাসন।

দুর্ঘটনার পর বেরিয়ে আসে কারখানাটি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ছিল নানান অনিয়ম। ভবনের নকশা ছিল অনুমোদনহীন। মানা হয়নি ইমারত নির্মাণবিষয়ক বিধি। অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থাতেও ছিল চরম অবহেলা।

আগুনের ঘটনা তদন্তে জড়িত একাধিক ব্যক্তি নিউজবাংলাকে বলেছেন, শুধু যাত্রার শুরু থেকে নয়, উৎপাদনে এসেও একের পর এক লঙ্ঘন করা হয়েছে নিয়মকানুন। ছিল না নিরাপদ কর্মপরিবেশ। শ্রমিকদের কাজ করার জায়গাতেই রাখা হতো ঝুঁকিপূর্ণ দাহ্য পদার্থ। ফায়ার অ্যালার্ম, ইমারজেন্সি এক্সিট ডোর, হাইড্রেন্ট সিস্টেমের মতো পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামের ঘাটতি ছিল।

বিশাল ভবনে দুটি সিঁড়ি ছিল, তবে প্রতিটি ফ্লোরে সিঁড়ি লোহার জালের পার্টিশনে ঘেরা এবং তা তালাবদ্ধ রাখার কারণে কর্মঘণ্টা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই সিঁড়ি দিয়ে কখনোই নামতে পারত না শ্রমিকেরা।

কারখানার পরিবেশ ও নিরাপত্তামান তদারকিতে সরাসরি জড়িত সরকারি তিনটি সংস্থার কর্মকর্তাদের দাবি, ওই কারখানা তাদের নিয়মিত পরিদর্শনের আওতায় ছিল। প্রতি মাসেই সেখানে যেতেন কর্মকর্তারা।

আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানান, কারখানার নিচতলা থেকে ছয়তলা পর্যন্ত রেজিন, বাটার, বাটার অয়েল, প্লাস্টিক, পবিলিস, হিট ফোম, পলিথিন, মবিল, ডিজেল, প্যাকেটিং, কাগজের রোলসহ খাদ্যপণ্য তৈরির প্রচুর দাহ্য পদার্থ ও কেমিক্যালের মজুত ছিল। এ কারণে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেক সময় লেগেছে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, কারখানাটি নিয়মিত পরিদর্শন করতেন সরকারের তিনটি সংস্থার কর্মকর্তারা। এই সংস্থাগুলো হলো, পরিবেশ অধিদপ্তর, কলকারখানা অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস।

তবে এখন প্রতিটি সংস্থাই দায় এড়ানোর চেষ্টায় ব্যস্ত। পরিবেশ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জের উপপরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল-মামুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কর্মকর্তারা প্রতি মাসে সেখানে গিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে পরিদর্শন করতেন। যেহেতু ফুড তৈরি করা হতো, সেহেতু বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যালের ব্যবহার ছিল।’

তিনি বলেন, ‘হাশেম কারখানার ঘটনাটি ফায়ার থেকে সৃষ্ট। তাদের পর্যাপ্ত ফায়ার ফাইটিং ব্যবস্থা ছিল না। আমরা ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স পাওয়ার পরেই তাদের সনদ দিয়েছি। কারখানা পরিদর্শনের সময় আমাদের কর্মকর্তারা মূলত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিয়ে থাকেন।’

অন্যদিকে, ফায়ার সার্ভিসের দাবি, তারা দুর্বল অগ্নিনিরাপত্তা নিয়ে অনেকবার সতর্ক করে নোটিশ দিয়েছে। তবে রাসায়নিক দ্রব্য দেখভালের দায়িত্ব তাদের নয়।

এ বিভাগের আরো খবর