শিথিল বিধিনিষেধে চলতে শুরু করেছে ট্রেন। তবে বৃহস্পতিবার প্রথম দিনে যাত্রী উপস্থিতি ছিল নিতান্তই কম। রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে দেখা যায়নি তেমন ভিড়। ট্রেনের বেশির ভাগ আসনই ছিল ফাঁকা।
ঈদ উপলক্ষে চালু করা ট্রেনে কঠোরভাবে মানা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। অনলাইনে টিকিটের ‘ঝামেলা’ নিয়ে যাত্রীরা কিছুটা ক্ষুব্ধ হলেও স্টেশনের পরিবেশে খুশি তারা। বৃহস্পতিবার রেলস্টেশন ঘুরে এমন চিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সকালে দেখা যায়, দুটি ট্রেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে অপেক্ষমাণ। যাত্রীরা সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই অবস্থান নেন। কাউন্টারে টিকিট কাটা বন্ধ থাকায় স্টেশনে নেই ভিড়। সকালে পারাবত, মহানগর ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস নামের তিনটি ট্রেন স্বল্পসংখ্যাক যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
স্টেশন ম্যানেজার মো. মাসুদ সারওয়ার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। সকালে তিনটি ট্রেন ছেড়ে গেছে। প্রতিটি ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে। সকল নিয়ম ও নির্দেশনা যেন যথাযথভাবে পালন করা হয়, সেদিকে আমরা নজর রাখছি। কোন যাত্রীকে মাস্ক ছাড়া ট্রেনে উঠতে দেয়া হচ্ছে না। স্টেশনের ভেতরেও প্রবেশ করতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।’
করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ২৩ জুন থেকে বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল। বিধিনিষেধ শিথিলের পর বৃহস্পতিবার থেকে চালু হয়েছে ট্রেন চলাচল। এখন ৩৮ জোড়া আন্তনগর এবং ১৯ জোড়া লোকাল ট্রেন চলবে।
কমলাপুর রেলস্টেশনে ঢোকার মুখেই র্যাব-৩-এর অস্থায়ী ছাউনি। টিকিট ছাড়া মূল স্টেশনে প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে লোকজনকে। আর মাস্ক ছাড়া স্টেশনে প্রবেশের সুযোগ নেই।
যাত্রীরা অনেকে জানালেন, প্রতিবার লকডাউনের শেষে ট্রেন চালু হলে প্রথম দিন এমন চিত্র থাকে। আস্তে আস্তে সব উধাও হয়ে যায়। যাত্রীদের ভিড়ে থাকে না স্বাস্থ্যবিধি।
যাত্রী শফিকুল ইসলাম যাবেন কিশোরগঞ্জ। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি গতকাল রাতেই টিকিট পেয়েছি। তবে সেটি আমাকে আবার প্রিন্ট করে নিয়ে আসতে হয়েছে। প্রথমে মোবাইলে থাকলেও তা নিয়ে ঢুকতে পারিনি।’
সার্বিক ব্যবস্থাপনায় খুশি শফিকুল বলেন, ‘বাইরে র্যাব আছে। এখন আর স্টেশনে টিকিট কাটতে হচ্ছে না, ভিড় নেই। স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। সবকিছুই ভালোভাবে হচ্ছে।’
ভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা জানালেন আব্দুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘ময়মনসিংহের টিকিট পেতে গতকাল থেকে চেষ্টা করেছি। সার্ভার ডাউন দেখায়, সিট নাই দেখায়। পরে টিকিট না পেয়ে স্টেশনে এসেছি। কিন্তু লাভ হয়নি।’
এদিকে কমিউটার ও লোকাল ট্রেনের টিকিট পেতে ভিড় ও লম্বা লাইন রয়েছে স্টেশনের বাইরে। বিশেষ করে কমিউটার ট্রেনগুলোর কাউন্টারে মানুষের ভিড় অনেক বেশি। অনলাইনের পাশাপাশি কমিউটার ট্রেনে কাউন্টার থেকে টিকিট কেনার সুযোগ রাখা হয়েছে, তাতে সাধারণ যাত্রীরা স্বস্তির কথা জানান।
বিধিনিষেধ শিথিল করে ১৪ জুলাই ঘোষণা দেয়া হয়, সরকারি নির্দেশনা মেনে অর্ধেক আসনে যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচল করবে। তবে টিকিট নিতে হবে অনলাইনে। কাউন্টারে শুধু লোকাল ও কমিউটার ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে।