নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন, তা যেন প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে পৌঁছায়, এ জন্য সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ঢাকায় নিজ বাসভবনে বুধবার সকালে এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্রদানে যেন স্বজনপ্রীতি না হয় এবং প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে পৌঁছায়, সেদিকে কঠোর সতর্ক থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের সহায়তা, গ্রামীণ কর্ম-সৃজন, পর্যটন খাত এবং পরিবহনশ্রমিক ও খেটে খাওয়া মানুষের জন্য ৩২০০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা দিয়েছেন। সত্যিকার অর্থে ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে তালিকাভুক্ত হয়, সেদিকে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিতে হবে।’
ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ পর্যায়ের এই নেতা বলেন, ‘লকডাউন শিথিল করার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঈদযাত্রায় মানুষের ভোগান্তি কমানোর পাশাপাশি খেটে খাওয়া মানুষের আর্থিক নিরাপত্তা এবং ঈদকে ঘিরে অর্থনীতির প্রবাহ গতিশীল রাখতে শেখ হাসিনা সরকারের এই উদ্যোগ।
‘মনে রাখতে হবে সাময়িক এ বিধিনিষেধ শিথিলের সুযোগ নিয়ে আমরা যেন গড্ডলিকা প্রবাহে গা না ভাসাই। এ পরিস্থিতিতে নিজেই হতে হবে নিজের রক্ষক। নিজেদের উদাসীনতা এবং অপরিণামদর্শীতায় উৎসবের যাত্রা যেন জীবনের শেষ যাত্রায় রূপ না নেয়।’
কাদের বলেন, ‘ঈদ সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী লকডাউনের ব্রেক দিলেও কাউকে করোনা ব্রেক দেবে না। প্রাণঘাতী রূপ নিয়ে সংক্রমণ ছড়াবেই। তাই শতভাগ মাস্ক পরিধানের কোনো বিকল্প নেই।
‘বিধিনিষেধ শিথিল করায় আগামীকাল থেকে সারা দেশে শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহন চলাচল করবে। ইতোপূর্বের ধারাবাহিকতায় সমন্বয়কৃত ৬০ ভাগ বর্ধিত ভাড়ায় অর্ধেক আসন খালি রেখে গণপরিবহন চলাচল করবে। আশা করি, পরিবহনমালিক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলো করোনার বর্তমান সংক্রমণ মাথায় রেখে স্বাস্থ্যবিধিসহ শর্তসমূহ মেনে যানবাহন পরিচালনা করবেন।’
এ সময় শর্ত অমান্যকারী এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারী পরিবহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী কাদের।
এ সময় সরকারের সমালোচনা করায় বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করেন কাদের। তিনি বলেন, ‘রূপগঞ্জের অগ্নিদুর্ঘটনায় সরকার যখন আন্তরিকভাবে কাজ করছে, তখন বিএনপি তাদের একমাত্র সম্বল বক্তৃতা-বিবৃতিবাজি করে যাচ্ছে। তারা ঘটনার ছয় দিন পরে রূপগঞ্জে গিয়ে এটা করতে হবে, সেটা করতে হবে বলে নানান কথার ফুলঝুরি ছড়াচ্ছে। এসব বিএনপির চিরাচরিত অপরাজনীতিরই ধারাবাহিকতা।’
কাদের বলেন, ‘বিএনপির ঘরবন্দি রাজনীতি এবং বিদ্বেষ ছড়ানো বাক্যবাণ দেশের সুস্থধারার রাজনীতিচর্চার পরিবেশকে দূষিত করছে। সবকিছু নিয়ে অতি-রাজনীতি করতে গিয়ে বিএনপি জনগণের কাছে দিন দিন অপাঙক্তেয় হয়ে যাচ্ছে।’