কোরবানির ঈদ উপলক্ষে আট দিনের জন্য শিথিল হচ্ছে চলমান শাটডাউন। এ সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস ও বিমানের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের মতো চালু করা হচ্ছে ট্রেন।
শিথিল শাটডাউনের সময় ট্রেন কীভাবে চলবে এ ব্যাপারে মঙ্গলবার বিস্তারিত জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হবে বুধবার থেকে। আর ট্রেন চালু হবে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে। চলবে ২৩ জুলাই ভোর ৬টা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ রেলওয়ের উপ পরিচালক (অপারেশন) রেজাউল হকের সই করা এক অফিস আদেশে বলা হয়, এই সময়ে আন্তঃনগর ট্রেনে কোনো সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে না। তবে শুধু ঈদের দিন অর্থাৎ ২১ জুলাই বন্ধ থাকবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল।
তবে আদেশে বলা হয়েছে, ২০ জুলাই ঢাকা-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রুটে একতা এক্সপ্রেস, ঢাকা-চিলাহাটি রুটে নীলসাগর এক্সপ্রেস, রংপুর-ঢাকা রুটের রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের চলাচল বন্ধ থাকবে। ২২ জুলাই ঢাকা-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রুটে একতা এক্সপ্রেস, ঢাকা-খুলনা রুটের সুন্দরবন এক্সপ্রেস, ঢাকা-চিলাহাটি রুটে নীলসাগর এক্সপ্রেস এবং রংপুর-ঢাকা রুটের রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোর চলাচল বন্ধ থাকবে।
ভ্রমণের দিনসহ পাঁচ দিন আগে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর অগ্রিম টিকিট ইস্যু করা হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যাত্রীদের সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তঃনগর ট্রেনের সকল কোচের ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক টিকিট বিক্রি করা হবে। টিকিটগুলো একইসঙ্গে অনলাইন এবং মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। কাউন্টার থেকে আন্তনঃগর ট্রেনের কোনো টিকিট বিক্রি করা হবে না বলেও জানিয়েছে রেলওয়ে। আর অনলাইন বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিক্রি করা কোনো টিকিট ফেরত নেবে না কর্তৃপক্ষ।
এ সময়কালে আন্তঃনগর ট্রেনে সব স্ট্যান্ডিং টিকিট ইস্যু সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। আর রাতের ট্রেনে বেডিং সেবায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে সরকারের জারি করা সব বিধিনিষেধ মেনে চলা হবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেনে চা, কফি, বোতলজাত পানি, প্যাকেটজাত খাবার (চিপস, বিস্কিট ইত্যাদি) সরবরাহের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এইচওআর, রেলওয়ে পাস এবং মিলিটারি ওয়ারেন্টের টিকিট আগের মত ইস্যু করার ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি রেলওয়ের কর্মচারীদের জন্য দুই শতাংশ টিকিট সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে। এসব টিকিট ভ্রমণের ২৪ ঘণ্টা আগে সংরক্ষণ করতে হবে। তাদের টিকিট অবশ্যই কাউন্টার থেকে ইস্যু করা হবে।
টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে রেলওয়ে। কালোবাজারির সঙ্গে কোনো কর্মচারী জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, কমিউটার ও মেইল এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাউন্টার হতে বিক্রি করা হবে। তবে সকল ক্ষেত্রে প্ল্যাটফর্ম টিকেট বিক্রি বন্ধ থাকবে।
প্ল্যাটফর্মে ঢোকার মুখে ও ট্রেনে যাত্রীদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। ট্রেনে ওঠা এবং নামায় নির্দিষ্ট দরজা ব্যবহার করতে হবে। কুলি, ট্রলি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে আরও জানিয়েছে, ট্রেনের প্রতিটি কোচ ও ইঞ্জিন চলাচলের আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এ সকল ট্রেন পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়টি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
এ ছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জারি করা নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন পরিচালনা করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।