বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যে কারণে শিথিল হলো শাটডাউন

  •    
  • ১২ জুলাই, ২০২১ ২১:৪৮

কোরবানির পশুর খামারিদের বাণিজ্যের কথা বিবেচনায় নিয়েছে সরকার। চাপ আছে দোকানমালিকদের দিক থেকে। তা ছাড়া, গত ঈদে লকডাউন দিয়েও ঘরমুখী মানুষের ঢল রোধ করা যায়নি। উল্টো লোকে দুর্ভোগে পড়েছে।

সারা দেশে করোনা সংক্রমণ যখন হু হু করে বাড়ছে, তখন কঠোর লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত কেন নিল সরকার?

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একদিকে জনস্বাস্থ্য আরেক দিকে ঈদ উৎসবে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার তাগিদ, এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে দোটানায় ভুগছিলেন নীতিনির্ধারকরা।

বিশেষ করে কোরবানির পশুর কেনাবেচা ঠিকমতো না হলে বিপুলসংখ্যক খামারির অপূরণীয় আর্থিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা। এবার কোরবানির জন্য খামারগুলোয় ১ কোটি ২০ লাখ পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। কোরবানিতে পশুর বাণিজ্য হয় প্রতিবছর ৪০ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকার।

১২ দিন ধরে শাটডাউন চলমান থাকলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে নেই আশার খবর। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ২৪ শতাংশ।

এ অবস্থায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শাটডাউন প্রত্যাহারের কোনো অবকাশ নেই।

তবু বৃহস্পতিবার থেকে ঈদ ছুটি পর্যন্ত শাটডাউন শিথিল করে দেশবাসীকে ঈদ পালনের সুযোগ দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখন শুধু প্রজ্ঞাপন জারির অপেক্ষা।

এ সময়ে শর্ত সাপেক্ষে চলবে গণপরিহন। খুলে দেয়া হবে দোকানপাট, শপিং মল। তবে ঈদের পর ফের ১৪ দিনের জন্য শাটডাউন দেয়া হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে নিউজবাংলা।

কেন শিথিল করা হচ্ছে?

শাটডাউন শিথিলের পেছনে বড় কারণ ঈদুল আজহা।

কোরবানির পশু ঘিরে হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য, খামারি, ক্রেতা-বিক্রেতা সবার কথা ভেবে এমন সিদ্ধান্তে এসেছে সরকার। এর সঙ্গে আছে প্রিয়জনদের কাছে গিয়ে ঈদ উদযাপনের প্রবণতা।

শাটডাউন শিথিলের বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে রাজি হননি করোনা পরিস্থিতি ও বিধিনিষেধ আরোপ নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কমিটির আহ্বায়ক এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি জানান, জীবিকা এবং জীবনের তাগিদে সবদিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘(কোরবানি ঈদের) অল্প কয়েক দিন রয়েছে। অনেকগুলো ফ্যাক্টর এখানে রয়েছে। এই যে খামারিরা তাদের পশুগুলো এত দিন ধরে কোরবানির জন্য তৈরি করেছে, এই খামারিরা যদি বিক্রি করতে না পারেন, তাহলে আগামী আরও এক বছর… এই ষাঁড় গরু তো দুধ দেয় না, বিক্রি করে যা পাওয়ার সেটা পেতে হবে। না হলে আরও এক বছর পালতে হবে এই ষাঁড় গরু।’

ব্যবসায়ীদের দিক থেকে চাপ আছে বলে ইঙ্গিত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দোকানমালিক সমিতির যারা আছেন, তারা কিন্তু এই দুই ঈদের জন্য বসে থাকেন। এসব কিছু চিন্তাভাবনা করে জীবিকা এবং জীবনের তাগিদে যা কিছু প্রয়োজন, সেগুলো মাথায় রেখে যা কিছু করার নির্দেশনা দেবে।’

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ যথাসময়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকারের সিদ্ধান্ত জানাবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদে ঘরমুখী মানুষের চাপ সামাল দিয়ে যাত্রা নির্বিঘ্ন করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

দুই মাস আগে রোজার ঈদে বাসসহ সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রেখেছিল সরকার। কিন্তু এসব বাধা উপেক্ষা করে ঈদের আগে ঘরমুখী হয় মানুষ। ফেরিঘাটে ঘরমুখী মানুষের ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেয়েছিল সরকার। কর্তৃপক্ষের অনুরোধ তোয়াক্কা না করে বাড়িমুখী হয়েছিল লাখ লাখ মানুষ।

গত ১২ মে মাদারীপুরের বাংলাবাজারে দুটি ফেরি থেকে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে ভিড়ের চাপে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় পদদলিত হয়ে আহত হয় অর্ধশতাধিক। এসব ঘটনা এড়াতে এবারের ঈদে গণপরিবহন চালু রাখতে চাচ্ছে সরকার।

বর্তমান সময়ে করোনার যে উচ্চগতির সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে, সেটার কারণ হিসেবে রোজার ঈদে সরকারের নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে মানুষের বাড়ি ফেরাকে দোষারোপ করছেন কর্মকর্তারা।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, রোজার ঈদে মানুষজন যেভাবে বাড়ি গিয়েছেন, সে বিষয়গুলোকে এবার চিন্তায় রেখেছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। তাই গণপরিবহন খুলে দেয়াকে অপেক্ষাকৃত ভালো সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন তারা।

এ বিভাগের আরো খবর