হাইওয়েতে চুরি হচ্ছে পোশাকখাতের রপ্তানি পণ্য। তাতে বিদেশি ক্রেতাদের কাছে যেমন ব্যবসায়ীদের প্রতিশ্রুতি নষ্ট হচ্ছে, তেমনি সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে দেশের। সমাধানে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে পোশাক শিল্প মালিকরা।
সচিবালয়ে সোমবার বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বে একটি দল দেখা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, হাইওয়ে পুলিশের প্রধান, পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যান মালিকদের প্রতিনিধিরাসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠক শেষে সরকারের নেয়া সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বিজিএমইএম। সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘আমরা আশ্বস্ত হয়েছি, আগামীতে আমাদের পণ্য চুরি হবে না।’
পরে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানালেন, দু-তিন বছর আগেও এমন অভিযোগ করেছিল পোশাক মালিকরা। তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে হাইওয়েতে যারা রাহাজানি, ডাকাতি করে কিংবা এ ধরনের ঘটনা ঘটায় তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয় পুলিশ।
মন্ত্রী বলেন, ‘উনারা সেটিই বলছেন, আবার যদি তেমন করে কড়াকড়ি ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তাহলে আমাদের পক্ষে অসুবিধা হচ্ছে।’
ঘটনার প্রেক্ষিতে সরকারের নেয়া সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘কাভার্ড ভ্যান বা ট্রাক-পণ্যবাহী গাড়িতে জিপিএস সিস্টেম চালু থাকতে হবে। যাতে করে রপ্তানি পণ্যবাহী গাড়িটি যে যাচ্ছে তার গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে মালিকপক্ষ এবং পুলিশ।
ট্র্যাকিং সিস্টেম ম্যান্ডেটরি করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের হাইওয়ে পুলিশ, কাভার্ড ভ্যানে ট্র্যাকিং সিস্টেম না থাকলে হাইওয়েতে উঠতে দেবে না। প্রোডাক্ট যেখানে যাবে তার একটা স্টিকার এবং যথাযথ ডকুমেন্ট পণ্যবাহী ট্রাকে থাকতে হবে এবং পুলিশ যেন দূর থেকে সেটা বুঝতে পারে এক্সপোর্টের জন্য যাচ্ছে।’
শিগগিরই এটা কার্যকর করা হবে বলেও নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পুলিশ, পরিবহন মালিক-শ্রমিক, পোশাক খাতের মালিক মিলে একটা এসওপি তৈরি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘তারা কীভাবে কাজটি দ্রুততার সঙ্গে, নির্ভরযোগ্যতার সঙ্গে রপ্তানি করতে পারবে, আমাদের পুলিশ কী সহযোগিতা করবে, পরিবহন মালিকরা কীভাবে সহযোগিতা করবে, পোশাকশিল্প মালিকরা কী অসুবিধা ফেস করছে- এসব নিয়ে একটি এসওপি তৈরি করবে। যাতে করে আরও সুন্দরভাবে নির্বিঘ্নে তাদের পণ্য তারা গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারে।’
এ ছাড়াও ২৫২ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দুই মাসের মধ্যে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী। বলেন, ‘ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। আমরা আশা করছি দু মাসের মধ্যেই ব্যবস্থা করতে পারব। এটা হলে অধিকাংশ রাহাজানি, লুটপাট বন্ধ হয়ে যাবে। মোট ২৫২ কিলোমিটার সড়কে ক্যামেরা বসাচ্ছি।’
যেকোনো রপ্তানিপণ্য পরিবহনে পুলিশের ফোকাল পয়েন্ট প্রস্তুত থাকবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।