বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফখরুল জেনেছেন, খাদ্যের অভাবে কষ্টে মানুষ

  •    
  • ১১ জুলাই, ২০২১ ১৮:৪০

‘সরকারি ছুটি, লকডাউন, কঠোর লকডাউনে আমরা কিন্তু যেভাবে দুরত্ব সৃষ্টি করা দরকার, সামাজিক দূরত্ব, শারীরিক দূরত্ব, সেই দূরত্ব সৃষ্টি করা সম্ভব হয় নাই। লকডাউনে কী দেখা যাচ্ছে? মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, কষ্ট পাচ্ছে, বলা যায় যে, অনেকে খাদ্যের অভাবে কষ্ট পাচ্ছেন।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে শাটডাউন নামে পরিচিতি পাওয়া চলমান লকডাউনে নিম্নআয়ের মানুষ খাদ্যের অভাবে কষ্টে আছে বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি মনে করেন, সরকার সাধারণ মানুষের জন্য অর্থের সংস্থান করতে না পারলে লকডাউন কার্যকর করতে পারবে না।

রোববার দলের এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কারফিউ দেয়ার বিষয়ে যে আলোচনার কথা গণমাধ্যমে এসেছে, সেটি নিয়েও তিনি প্রতিক্রিয়া জানান। বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে কারফিউকে সমাধান বলে মনে করে না বিএনপি।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘কারফিউ জারিটা কোনো সমাধান নয়। এই লকডাউনেও যদি আপনি সঠিকভাবে সাধারণ মানুষের অর্থের ব্যবস্থা করতে না পারেন এবং সেখানে যদি তাদের খাদ্যের ব্যবস্থা করতে না পারেন সেখানে ওই অপরিকল্পিত লকডাউনও তো সঠিক সমাধান আনতে পারবে না।'

বিএনপি নেতা বলেন, ‘সরকারি ছুটি, লকডাউন, কঠোর লকডাউনে আমরা কিন্তু যেভাবে দুরত্ব সৃষ্টি করা দরকার, সামাজিক দূরত্ব, শারীরিক দূরত্ব, সেই দূরত্ব সৃষ্টি করা সম্ভব হয় নাই। লকডাউনে কী দেখা যাচ্ছে? মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, কষ্ট পাচ্ছে, বলা যায় যে, অনেকে খাদ্যের অভাবে কষ্ট পাচ্ছেন।'

২০২০ সালের মার্চে করোনা সংক্রমণের পর ২৬ মার্চ থেকে ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি দেয় সরকার। চলতি বছর ৫ এপ্রিল থেকে দেয়া হয় লকডাউন। পরে বিধিনিষেধ ধীরে ধীরে শিথিল করার পর গত ১ জুলাই থেকে শুরু হয় শাটডাউন।

এবার সরকার অনেক বেশি কঠোর, যে কারণে বাইরে সাধারণের চলাচল তুলনামূলক অনেক কম। মানুষের গণজমায়েত ঠেকাতে এবার পুলিশ, র‌্যাবসহ নানা বাহিনীর সঙ্গে সক্রিয় সেনাবাহিনীও।

১ জুলাই থেকে যৌক্তিক কারণ ছাড়া বাইরে আসা কয়েক হাজার মানুষকে আটক করে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এদের বহুজনের জরিমানা পরিশোধের মতো সক্ষমতা নেই। এ কারণে তাদের জরিমানা এনজিওর পক্ষ থেকে পরিশোধের খবর এসেছে গণমাধ্যমে।

ফখরুল পুলিশি ব্যবস্থায় সমাধান দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘লকডাউনের লক্ষ্যটা হচ্ছে- মানুষকে মানুষের কাছ থেকে দূরে রেখে, দূরত্ব সৃষ্টি করে সংক্রমণটা প্রতিরোধ করা। সেটার জন্য তো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কোথায় সেই সচেতনতা? খালি ধমক দিয়ে আর গরিব মানুষকে জেলের মধ্যে পুরে দিলে তো হবে না।

‘আমি পত্রিকায় দেখলাম সাড়ে ৪ হাজার মানুষকে জেলে দেয়া হয়েছে। এরা কারা? তারা সমস্ত সাধারণ গরিব মানুষ। তারা দিন আনে দিন খায়, হয়ত রিকশা চালায়, ঠেলা গাড়ি চালায়, হয়ত কোনো একটা রেস্টুরেন্টে চাকরি করে, এরা যখনই বেরিয়েছে তাদেরকে ধরে নিয়ে গেছে।

‘এমনও কথা বেরিয়েছে যে, বাবার জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার আনতে গেছে সেখানে তাকে গ্রেপ্তার করার ফলে সেই বাবা অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন। এই অপরিকল্পিত ব্যবস্থার ফলেই কিন্তু আজকে এ ঘটনা ঘটেছে।'

রোববার বিএনপির এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল।

দারিদ্র্য বৃদ্ধির আশঙ্কায় ফখরুল

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে যারা কাজ করে, তাদেরকে প্রণোদনা দেয়ার দাবি জানান ফখরুল। বলেন, ‘এখন তাদেরকে না বাঁচানো গেলে অন্যথায় সত্যিকার অর্থেই তারা দারিদ্র্যের নিম্নস্তরে নেমে যাবে।’

বিএনপি নেতা বলেন, ‘দিন আনে দিন খায় মানুষ যারা, তারা কোনো রকমের সহযোগিতা পাচ্ছে না। ইনফরমাল সেক্টার তো এমনিতেই তারা ছোট ছোট পূঁজি নিয়ে কাজ করে। দুইবার লকডাউনের ফলে এই ক্ষুদ্র মানুষগুলো তাদের পূঁজি হারিয়ে ফেলেছে, তারা নিঃস্ব হয়ে গেছে, পথে বসে গেছে।

‘আমি বৃটেনের খবর জানি, যুক্তরাষ্ট্রের খবর জানি, যারা ছোট ছোট রেস্টুরেন্ট চালান, ইনফরমাল সেক্টার যেগুলো আছে এরা কিন্তু সকলেই আগেই প্রণোদনা পেয়ে গেছে। অর্থাত মাস শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রণোদনা পেয়ে যায় ফলে তাদের ওখানে যারা কাজ করে তারা বেতন পেয়ে যায়, যারা মালিক তারাও ভালো একটা অর্থ পায়। দিস শুড বি এ গভর্নমেন্ট-এটাই হওয়া উচিত সরকারের।'

সিভিল সার্জনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা

ঢাকার সিভিল সার্জন জেলার সব হাসপাতালে সাংবাদিকদের করোনা সংক্রান্ত কোনো তথ্য না দিতে যে আদেশ জারি করেছেন তার নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই ধরনের সার্কুলার প্রমাণ করে যে, তারা (সরকার) প্রকৃত তথ্য গোপন করছে এবং করতে চায়। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা সরকার প্রকাশিত সংখ্যার চাইতে অনেক বেশি। এই ধরনের তথ্য গোপনের প্রচেষ্টা স্বাধীন গণমাধ্যম ও গণতন্ত্র পরিপন্থি।'

‘সরকারের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি’

করোনার প্রতিটি টিকা কিনতে তিন হাজার টাকা খরচ করার দাবি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞাপন নিয়েও কথা বলেন ফখরুল। সরকার ভারত থেকে ৪ ডলারে আর চীন থেকে ১০ ডলারে টিকা কেনার কথা জানালেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে তিন হাজার টাকায় কেনা হয়েছে একেকটি টিকা।

ফখরুল বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে যে, কোথাও কোনো রকমের ব্যবস্থা নেই। হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ নেই, অক্সিজেন নেই, সিলিন্ডার নেই, বেড নেই-এই যে চরম অব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতি। যার ফলেই আজকে করোনা পরিস্থিতি আক্রমণাত্মক হয়ে দেখা দিচ্ছে, একে সামাল দেয়া যাচ্ছে না।’

‘একলা চলো নীতিতে ওরা বিশ্বাসী’

করোনা মোকাবেলায় বিএনপির দেয়া ৫ দফা প্রস্তাব গ্রহণ না করায় সরকারের সমালোচনা করেন ফখরুল। এসব প্রস্তাবের বেশিরভাগ বাস্তবায়ন হয়ে গেছে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘উনার সুনির্দিষ্টভাবে বলুক কোনটা কোনটা বাস্তবায়ন করেছেন। চর্বিত চর্বণ তো প্রতিদিন উনারা করছেন। তাদের সমস্যাটা হচ্ছে যে, তারা কোনো সমালোচনা শুনতে চান না। আমরা শুধুমাত্র সমালোচনা করি না, পাশাপাশি সমস্যা সমাধানের প্রস্তাবও দেই।

‘এই যে তাদের একলা চলো নীতি, দুর্নীতি করো নীতি, লুটপাট করো নীতি এটাই তো এই দেশটাকে, এই জাতিকে চরম বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে নিয়ে গেছে।'

করোনা মোকাবিলায় সরকারের ওয়ার্ড পর্যায় কমিটি গঠন সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন আবার ওয়ার্ড কমিটিতে দুর্নীতি শুরু হবে। ওখানে টাকা-পয়সা ভাগ করে নেবে আরকি। আমরা মনে করি এটা ফিজিবল না।’

ঘর নিয়ে তদন্ত লোক দেখানো

উপহারের ঘর নির্মাণে ‘হরিলুট’ চলছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে তদন্ত করা হচ্ছে সেটি লোক দেখানো। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের খুঁজে বের করার দাবিও জানান তিনি।

ঠাকুরগাঁওয়ে টিভি চ্যানেল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও দৈনিক ইত্তেফাকের সংবাদদাতা তানভীর হাসান তনুকে ডিজিটাল আইনে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তার মুক্তির দাবি জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর