বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ধসে পড়ছে দেখেও প্রতিনিধি দলের মূল্যায়ন, ‘অনিয়ম হয়নি’

  •    
  • ১০ জুলাই, ২০২১ ২২:৪৩

এসব ঘর অবহেলা ও অনিয়মের কারণে ভেঙে পড়েনি। ভূমি ধসের কারণে পাকঘর ও টয়লেট ধসে পড়েছে। এগুলো টেকসই করতে আরসিসি পিলারও দিয়েও রক্ষা করা যায়নি: বগুড়ার শেরপুরের খানপুরে ধসে পড়া ঘর দেখে পরিদর্শক দলের প্রধান মাহবুব হোসেন।

বগুড়ার শেরপুরের খানপুরে নির্মাণ করা উপহারের ২২টি ঘর পরিদর্শন করে সারা দেশে নেয়া প্রকল্পের প্রধান মাহবুব হোসেন বলেছেন, অবহেলা ও অনিয়মের কারণে ধসে পড়ার ঘটনা ঘটেনি। মেরামত করলেই ঘরগুলো থাকার উপযোগী হবে।

উপহারের ঘরের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত যেগুলোর ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম খানপুরের এই ঘরগুলো।

এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী হায়দার আলী, আব্দুল কাদের, ছালমা বেগম, শেফালী বেগম, নদীয়ার চাঁদ, মোকছেদ আলী, সোনা উদ্দিন ও গোলাপী বেগমের বাড়ির পেছনে টয়লেট ও মাটি খালে ধসে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে দেয়ালও। খালটিতে বাঁশের পাইলিং করে প্রকল্পের বাড়িগুলো রক্ষার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। তবে শেষরক্ষা হয়নি।

প্রতিটি ঘরের সঙ্গে টয়লেট দেয়ার কথা থাকলেও ২২ ঘর মিলে দেয়া হয়েছে তিনটি। আর ঘরগুলো ভেঙে পড়ার ভয়ে তারা সেখানে বসবাস করছেন না।

ছাবেদ আলী বলেন, ‘আমরা জীবনের ভয়ে সরকারের দেয়া বাড়িতে উঠতে পারিনি। যেকোনো সময় আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাকি ঘরগুলোও ভেঙে পড়তে পারে।’

উপহারের ঘর নির্মাণে অনিয়ম খতিয়ে দেখতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে যে পাঁচটি দল করে দেয়া হয়েছে তার একটির নেতৃত্বে আছেন এই ঘর নির্মাণ প্রকল্পে প্রকল্প কর্মকর্তা মাহবুব হোসেন।

শনিবার বগুড়ার শেরপুরে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরে পরিদর্শন করেছে পরিদর্শক দল। ছবি: নিউজবাংলা

প্রথম দিন মুন্সিগঞ্জের পর দ্বিতীয় দিন তার নেতৃত্বাধীন দলটি যায় বগুড়ায়। সেখানে সদর, শেরপুর ও শাহজাহানপুর যাওয়ার কথা আগে জানানো হলেও দলটি যায় কেবল শেরপুরের খানপুর ও সীমাবাড়িতে।

এর মধ্যে খানপুর পরিদর্শন করে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এসব ঘর অবহেলা ও অনিয়মের কারণে ভেঙে পড়েনি। ভূমি ধসের কারণে পাকঘর ও টয়লেট ধসে পড়েছে। এগুলো টেকসই করতে আরসিসি পিলারও দিয়েও রক্ষা করা যায়নি।’

তবে তার এই বক্তব্য আগের দিন মুন্সিগঞ্জে দিয়ে আসা বক্তব্যের বিপরীত। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রকল্প অফিস থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া ছিল। এই মুহূর্তে ঘর নির্মাণ করা যাবে এমন খাস জমি পেলে ঘর নির্মাণ করতে হবে। আমরা কাউকে বলিনি তোমরা নদীর পাড়ে, খালের পাড়ে, মাটি ভরাট করে এখনই করো।’

বগুড়ার শেরপুরে ক্ষতিগ্রস্ত উপহারের ঘর। ছবি: নিউজবাংলা

শেরপুরের খানপুরে পরিদর্শন চলাকালে সেখানে উপস্থিত ছিলেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক, শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাবরিনা শারমিন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তারিকুল ইসলাম তারেক, পিআইও সামছুন্নাহার শিউলীসহ অন্যরা।

‘অভিযোগ করেনি কেউ’

একই দিন নওগাঁয় পরিদর্শনে যায় আশ্রয়ন প্রকল্প-২ প্রকল্পের সহকারী পরিচালক বদরুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল।

বদরুল দাবি করেন, তারা যেখানে যেখানে গিয়েছন, সেখানে কোনো উপকারভোগী তাদের কাছে প্রশ্ন করেনি।

দুপুরে জেলার পত্মীতলা উপজেলার পুইয়া নাম স্থানে ১১টি ঘর পরিদর্শন করেন দলটি। পরে এর প্রধান বদরুল আলম বলেন, ‘চলাচলের নিচু সড়কে পানি জমে থাকা এবং দুই-একটি ঘরের দেয়ালে ফাটলের অভিযোগ ছিল। সেগুলো এরই মধ্যে মেরামত করা হয়েছে। এসব নিয়ে বসবাসকারীরাও আমাদের কোনো অভিযোগ করেননি।’

দুই ধাপে এই জেলায় মোট এক হাজার ৫৫৮টি বাড়ি গৃহহীনদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

শনিবার নওগাঁর ক্ষতিগ্রস্ত ঘরে পরিদর্শন করেছে পরিদর্শক দল। ছবি: নিউজবাংলা

কয়েকটি ঘরের ফাটল ও মেঝের প্লাস্টার উঠে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে প্রশাসন বলছে, নিচু জমি ভরাট করে নতুন মাটিতে ঘর নির্মাণ ও বর্ষার কারণে দুই একটি ঘরে এই সমস্যা দেখা গেছে। বড় ধরনের কোনো সমস্যা নয়। অভিযোগ পাওয়ার পর পরই এসব ঘর পুনরায় মেরামত করে দেয়া হয়েছে।

সদর উপজেলার আবাদপুর গ্রামের উপকারভোগী আমিনুল ইসলাম জানান, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর ঘর পাওয়ার পর ঘরে উঠার কিছু দিন পর দেখি আমার ঘরের দেয়াল ও মেঝের প্লাস্টার উঠে যাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানানোর পর দেয়াল ও মেঝেতে প্লাস্টার করে রং করে ঠিক করে দিয়েছে। এখন আর কোনো অসুবিধা নেই।’

ঘরে ফাটল ও মেঝে উঠে যাওয়ার প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসক মো: হারুন অর রশীদ বলেন, ‘যেসব নিচু জমি ভরাট করে নতুন মাটিতে ঘর নির্মাণ ও বর্ষার কারণে দুই-একটি ঘরে সামান্য এই সমস্যা দেখা গেছে। আমরা শোনার সঙ্গে সঙ্গে এসব ঘর মেরামত করে দিয়েছি।’

এ বিভাগের আরো খবর