ছয় বছরের শিশু পাখির চোখে মুখে জিজ্ঞাসা। কোথায় তার মা?
ভাইয়ের সঙ্গে ঢাকা মেডিক্যাল ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও সন্ধান পায়নি মায়ের। আবারও তাই এসেছে রূপগঞ্জের সজিব গ্রুপের কারখানা হাশেম ফুডসের ভবনের সামনে।
কারখানাটিতে বৃহস্পতিবার রাতে আগুন লাগার পর থেকে অনেকের সঙ্গে নিখোঁজ পাখির মা নাজমা বেগম। তিনি এই কারখানার চতুর্থ তলার কাজ করতেন।
তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিখোঁজ যে ৫১ জনের তালিকা করা হয়েছে, তাতে নাম নেই নাজমার।
পাখি নিউজবাংলাকে বলে, ‘ওই দিন সকালে (বৃহস্পতিবার) মায় কাজে আইছিল। এর পর আর বাসায় যায় নাই। কত জায়গায় গেছি কিন্তু মা রে পাই না। আমার মারে আইন্না দেন।’
পাখির ভাই নাজমুলের বয়স ১৩। সে এই কারখানার তিনতলায় কাজ করে। বৃহস্পতিবার বিকেলে চারটার দিকে তার ছুটি হয়ে যায়। খবর পেয়ে কারখানার সামনে গিয়ে দেখে আগুন জ্বলছে।
নাজমুল বলে, ‘আমি তিন তলায় কাম করি, মায় করে চার তলায়। আগুনের পর থেকে মারে পাইনা। আমরা কোথাও নামও লেখায় নাই।’
তাদের মতো আরও কয়েকটি পরিবারকে দেখা গেছে কারখানার সামনে। স্বজন নিখোঁজের ঘটনায় তারাও কোনো তালিকায় নাম তুলেননি।
তালিকতায় নাম ছাড়া নিখোঁজ আছেন করিমা আক্তার ও তার ভাই সুপান। তাদের বাড়ি সিলেটে। এছাড়া আড়াই হাজারের আফিস নামে আরেক শ্রমিকও নিখোঁজ বলে দাবি করেছেন তার স্বজন।
আফিসের বোন সিমা বেগম বলেন, ‘এখনও ভাইকে পাইনি। আগুনের খবর টিভিতে দেখে কারখানার সামনে এসেছি। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস যেখানে যেতে বলেছে সেখানে গিয়েছি। কিন্তু এখনো ভাইয়ের খবর পাইনি।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে কারখানাটিতে আগুন লাগার পর শুরুতে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পর দিন উদ্ধার করা হয় ৪৯ জনের মরদেহ। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ জনে। বেশির ভাগের মরদেহই পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। পরিচয় শনাক্তের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা চলছে।