নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুড বেভারেজ কোম্পানির কারখানায় ভয়াবহ আগুনের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে ফায়ার সার্ভিস।
কমিটির প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান নিজেই নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আমরা কাজ করছি। এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে নির্বাপণের চেষ্টা চলছে।’
ভবনের চারতলা থেকে ৪৯টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ভবনে সার্চ করছি, আশা করছি ভেতরে আর কোনো লাশ নেই।’
কীভাবে এই আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে; ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত, তা আগামী ১০ কার্যদিবসে মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।
রূপগঞ্জে কার্টন কারখানার আগুনে পুড়ে ৫০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বাহিনীর ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক (অপারেশন) দেবাশীষ বর্ধন নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, এরই মধ্যে পুড়ে মারা যাওয়া ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডিএনএ ইউনিটের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে।
দেবাশীষ জানান, বেশির ভাগ মরদেহই উদ্ধার করা হয়েছে ভবনের চারতলা থেকে। পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় এখনও উদ্ধার অভিযান চালানো হয়নি। সেসব তলায় অভিযানের পর মৃতের প্রকৃত সংখ্যা জানানো যাবে।
তিনি আরও জানান, জরুরি বহির্গমন পথ বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা বের হতে পারেননি। তাদের বেশির ভাগ ভবনের ছাদে উঠে যান।
ভবনটিতে প্রচুর পরিমাণে দাহ্য পদার্থ ছিল জানিয়ে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, এসব পদার্থের কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতার কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুড বেভারেজ কোম্পানির কার্টন কারখানা থেকে আগুনের সূত্রপাত। দ্রুত সেই আগুন সাততলা ভবনটিতে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট কাজ করেও শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নেভাতে পারেনি।
আগুনে বৃহস্পতিবার দুজনের মৃত্যু হয়। একজনের মৃত্যু হয় ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে। শুক্রবার উদ্ধার হওয়া ৪৯ জনসহ মোট মৃতের সংখ্যা ৫২।