করোনা মহামারিকালে রাজনৈতিক সরকারের নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সচিবদের সমন্বয়কের ভূমিকা দেয়া হয়েছে জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা মধ্য দিয়ে অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন সচিবরা। এখানে কাউকে বড় বা খাটো করা হয়নি।
ঢাকার মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনে চট্টগ্রাম জেলা সমন্বয় সভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি কার্যক্রম সমন্বয়ের দায়িত্ব সচিবরাই পালন করেন এবং সে হিসেবেই সচিবদের মূলত বিভিন্ন জেলায় সরকারি কার্যক্রম সমন্বয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’
গণতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিক সরকার দেশ পরিচালনা করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই রাজনৈতিক সরকারের দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে, করোনা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে, করোনা মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে, ত্রাণ তৎপরতা চালানোর ক্ষেত্রে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে অর্থাৎ কোভিড উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তগুলো সমন্বয় করার জন্যই সচিবদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’
সচিবরা সরকারি কাজে সব সময় সমন্বয় করেন জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সচিবরা যে সমস্ত জেলায় সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন তারা সেখানে সেই জেলার মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং অন্যান্য জনপ্রতিনিধি যারা আছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই সমন্বয়টা করছেন, সুতরাং এখানে কাউকে বড় বা খাটো করা হয়নি।’
ড. হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীনের সঞ্চালনায় ওই সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রামের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সালেহ মো. তানভীর, চট্টগ্রামের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও অন্যান্য দপ্তরের প্রতিনিধিরা।
টিকা কিনতে কোনো প্রকল্পের বরাদ্দ কমাতে হবে না
মেগা প্রকল্পগুলোর অর্থ কমিয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা সংগ্রহে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির মতো জোড়াতালি দিয়ে আওয়ামী লীগ দেশ চালায় না। টিকা ক্রয়ের জন্য কোনো প্রকল্পের বরাদ্দ কমানোর প্রয়োজন নেই।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ ছিল, সেজন্য তারা এদিক থেকে কাট করে ওদিকে লাগিয়ে—এভাবে জোড়াতালি দিয়ে দেশ চালিয়েছে। তাদের মতো জোড়াতালি দিয়ে আমাদের দেশ চালাতে হবে না।’
করোনা মোকাবিলা এবং করোনার টিকা কিনতে সরকার পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ রেখেছে বলেও জানান মন্ত্রী।
চলমান শাটডাউনে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতি নজর দিতে বিএনপি মহাসচিবের পরামর্শ নিয়েও কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘সরকার প্রথমদফা লকডাউনের সময় ৭ কোটির বেশি মানুষকে সহায়তা দিয়েছে। ইতোমধ্যে আরও কয়েক কোটি মানুষকে সহায়তা দেয়া হয়েছে এবং এই সহায়তা চলমান রয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিবের সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব তো জনগণের পাশে দাঁড়ান নাই, শুধু টেলিভিশনেই বক্তব্য দেন আর মাঝেমধ্যে অনলাইনে উঁকি দিয়ে বক্তব্য দেন, সে কারণেই তারা এ কথাগুলো বলছেন। দেশে কি কোনো হাহাকার আছে?’
করোনা মহামারি ১৬ মাসে একটি মানুষও খাওয়ার অভাবে মারা যায়নি বলেও দাবি করেন তিনি। বলেন, ‘আমি মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলব, এ ধরনের পরামর্শ না দিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।’
টিভি নাট্য পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড এবং অভিনয় শিল্পী সংঘের নেতারা বৃহস্পতিবার মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। ছবি: সংগৃহীত
পরে টিভি নাট্য পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড এবং অভিনয় শিল্পী সংঘের নেতারা আসেন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০২১ এ টেলিভিশন শিল্পীদের অন্তর্ভুক্ত করায় মন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানান তারা।