দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ১১ হাজার ৬৫১ জন, যা এক দিনের হিসাবে সর্বোচ্চ। এ সময় মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৯৯ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ পর্যন্ত করোনা ধরা পড়েছে ৯ লাখ ৮৯ হাজার ২১৯ জনের দেহে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ৭৯২ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৬০৫টি ল্যাবে করোনার ৩৬ হাজার ৮৫০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৬২ শতাংশ। সার্বিক শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৪১ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৫ হাজার ৮৮৮ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৫৬ হাজার ৩৪৬ জন। সুস্থতার হার ৮৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে পুরুষ ১৩৩ জন ও নারী ৬৬ জন। এর মধ্যে দুটি শিশুও রয়েছে।
বাকিদের মধ্যে বিশোর্ধ্ব ৯, ত্রিশোর্ধ্ব ৬, চল্লিশোর্ধ্ব ২৮, পঞ্চাশোর্ধ্ব ৪৭ ও ষাটোর্ধ্ব ১০৭ জন।
বিভাগ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকায়। এরপরই রয়েছে খুলনা বিভাগ, ৫৫ জন। এ ছাড়া রাজশাহীতে ১৫ জন, চট্টগ্রামে ৩৭, বরিশালে ৩, সিলেটে ৫, রংপুরে ৯ ও ময়মনসিংহে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনা প্রথম শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। উদ্বেগ থাকলেও প্রথম কয়েক মাসে ভাইরাসটি সেভাবে ছড়ায়নি।
তবে মে মাস থেকে ব্যাপকভাবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তখন আক্রান্তের হটস্পট ছিল ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামের মতো জনবহুল শহরগুলো।
গত শীতে দ্বিতীয় ঢেউ আসার উদ্বেগ থাকলেও সংক্রমণ ও মৃত্যু- দুটোই কমে আসে। একপর্যায়ে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে নেমে যায়। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবেচনায় মহামারি নয়, নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি।
তবে গত মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে শনাক্তের হার আবার বাড়তে থাকে। দ্বিতীয় ঢেউ নিশ্চিত হওয়ার পর এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ভারতে করোনার নতুন ধরনের কথা জানা যায়।
সেই ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্তদের দ্রুত অসুস্থ করে দেয়, তাদের অক্সিজেন লাগে বেশি। ছড়ায়ও দ্রুত, তাই মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয় ২৪ এপ্রিল। কিন্তু বিধিনিষেধ না মানায় ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকানো যায়নি।
প্রথমে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট রাজশাহী অঞ্চলে ব্যাপক মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পরে তা ছড়ায় খুলনা বিভাগে। সেই সঙ্গে ঢাকা বিভাগের বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চল আর টাঙ্গাইল এলাকাতেও সংক্রমণ ঘটে ভাইরাসটির।
পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় গত ২২ জুন থেকে ঢাকাকে ঘিরে রাখা সাত জেলায় যান চলাচল বন্ধ করে রাজধানীকে বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এতেও কাজ না হওয়ায় ১ জুলাই থেকে শুরু হয় শাটডাউন। সরকার জনগণের চলাচল রোধে এবার যে কঠোর, তার প্রমাণ মেলে সেনাবাহিনী মোতায়েনেই।
অকারণে বাড়ির বাইরে আসায় প্রতিদিনই বিপুল পরিমাণ জরিমানা আদায় করা হচ্ছে; কেবল ঢাকায় আটক করা হচ্ছে কয়েক শ মানুষকে। শাটডাউন প্রথমে সাত দিনের জন্য দেয়া হলেও পরে তা বাড়ানো হয়েছে আরও সাত দিন।