করোনার ছোবলে গোটা দেশ যখন স্থবির তখন সাংবিধানিক আদালত সীমিত পরিসরে হলেও তাদের দায়িত্বপালনে তৎপর। চলমান শাটডাউনের মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকেরা বাসায় বসে বিচার কাজে অংশ নিচ্ছেন।
মঙ্গলবার প্রধান বিচাপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ ছয় বিচারকের আপিল বেঞ্চ দুটি মামলার শুনানি শেষ করে রায় দিয়েছে।
ভার্চুয়াল আদালতে এটি একটি সাফল্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান বিচারপতি।
তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা সবাই নিজ নিজ বাসা থেকে যুক্ত ছিলাম। অ্যাটর্নি জেনারেল তার বাসা থেকে, তার অফিসের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলগণ নিজ নিজ বাসা থেকে শুনানিতে অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবীগণ তাদের নিজ নিজ বাসা থেকে শুনানিতে সংযুক্ত ছিলেন। এমনকি সুপ্রিমকোর্টের কর্মকর্তা, কর্মচারীগণও বাসা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।’
ভার্চুয়ালি শুনানি শেষে আপিল বিভাগ দুটি ডেথ রেফারেন্স সংক্রান্ত ‘জেল আপিল’ নিষ্পত্তি করে রায় দেয়।
করোনা সংক্রমণরোধে গত ১ জুলাই থেকে সারা দেশে জারি করা কঠোর লকডাউন আরোপ করে সরকার, যা পরিচিতি পেয়েছে শাটডাউন নামে।
শাটডাউনের মধ্যে সারাদেশের সব আদালত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় প্রত্যেক চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী জেলা/মহানগরে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এক বা একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক উপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন।
এ ছাড়া, হাইকোর্ট বিভাগের তিনটি বেঞ্চে এবং আপিল বিভাগ ভার্চুয়ালি চলবে বলেও নির্দেশনা দেয়া হয়। এর আলোকে মঙ্গলবার আপিল বিভাগ তথা দেশের সর্বোচ্চ আদালত বাসায় বসেই পরিচালিত হয়েছে।
চলতি বছরের ১৪ মার্চ থেকে ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়ে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। এ কারণে গত ১২ এপ্রিল থেকে ভার্চুয়ালি সপ্তাহে তিন দিন আপিল বিভাগ আর দুই দিন চেম্বার আদালতের বিচার কাজ পরিচালনা করে আসছিল।
এরপর পর্যায়ক্রমে হাইকোর্টের বেঞ্চ সংখ্যা বাড়াতে থাকে এবং নিম্ন আদালত সব খুলে দেয়। এর মধ্যে করোনা সংক্রমণ আবারও বৃদ্ধি পাওয়ায় আদালত পরিচালনার জন্য নতুন এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।