বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘সাজা হলেই দুধে ভাসব, ভুল ধারণা’

  •    
  • ৬ জুলাই, ২০২১ ১৪:০১

একটি মামলার আপিল শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমার মনে হয়, স্ত্রীর মামলায় ৮০ শতাংশ স্বামীর সাজা হয়। ফাঁসি হয়, যাবজ্জীবন হয়। তাতে কি স্ত্রী হত্যা কমেছে? এটার পরিসংখ্যান হওয়া উচিত। এটা ভুল ধারণা যে, সাজা দিলেই আমরা দুধের মধ্যে ভাসতে থাকব।’

স্ত্রী হত্যায় দেশে স্বামীদের সাজাতে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কমেছে কি না এ ব্যাপারে পরিসংখ্যান হওয়া উচিত বলে মনে করছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

মঙ্গলবার সন্তান হত্যার অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর করা মামলার আপিল বিভাগে শুনানিতে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ইন্ডিয়ার থেকে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি (ল’ অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশনে) কোনো অংশেই খারাপ না। কিন্তু ইন্ডিয়াতে ২০১৯ সালে মৃত্যুদণ্ড হয়েছে ১২১ জনের (স্বামীর), আর আমাদের এখানে হয়েছে ৩২৭ জনের।

‘আমার মনে হয়, স্ত্রীর মামলায় ৮০ শতাংশ স্বামীর সাজা হয়। ফাঁসি হয়, যাবজ্জীবন হয়। তাতে কি স্ত্রী হত্যা কমেছে? এটার পরিসংখ্যান হওয়া উচিত। এটা ভুল ধারণা যে, সাজা দিলেই আমরা দুধের মধ্যে ভাসতে থাকব।’

শাশুড়ির সঙ্গে রাগ করে বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় নিজ সন্তানকে হত্যা করে বাবা জসিম রাঢ়ী। এ ঘটনায় স্ত্রী স্বামী জসিমের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় স্বামী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। পরে বিচারিক আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এই রায় ২০১৩ সালে হাইকোর্টও বহাল রাখে।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আসামিকে ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। যেহেতু আসামি ২০০৭ সাল থেকে কারাগারে আছেন সেক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকলে মুক্তির নির্দেশও দিয়েছে আদালত।

মামলাটির আপিল শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মামলার নজির তুলে ধরা হয়।

তখন প্রধান বিচারপতিও একটি মামলার রেফারেন্স তুলে ধরে বলেন, এক লোক সকাল বেলা একটি চায়ের দোকানে গেল। দোকানে গিয়ে দেখে একজন চা খাচ্ছে তখন তাকে ধরে মাটিতে শুয়ায়ে গলা কেটে পৃথক করে ফেলল, পরে মাথাটা লটকিয়ে নিয়ে থানায় নিয়ে হাজির হয়েছে। এ ঘটনায় আদালত তাকে ফাঁসি দিয়েছে। তখন সুপ্রিমকোর্ট বলল, এ অপরাধের ক্ষেত্রে ফাঁসির সাজা কমানো যায় না।

শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালতকে বলেন, ঘটনাটি ছিল আকস্মিক। শাশুড়ির অপমান সহ্য করতে না পেরে নিজের ওপরে নিয়ন্ত্রণ হারান ওই বাবা। সে সময় তিনি নিজেকেও হত্যা করতে পারতেন। কিংবা শাশুড়িকে হত্যা করতে পারতেন। অর্থাৎ ঘটনাটি কোনো পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়নি। নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আর আসামির পক্ষে রাষ্ট্রীয় নিয়োগকৃত আইনজীবী ছিলেন মো. হেলাল উদ্দিন মোল্লা।

এ মামলার বিবরণে জানা যায়, বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা জসিম রাড়ী ২০০৭ সালে শাশুড়ির সঙ্গে রাগ করে নিজ সন্তানকে হত্যা করে। এ ঘটনায় তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে। এ মামলায় বিচারিক আদালত সন্তান হত্যার দায়ে বাবা জসিম রাঢ়ীকে ফাঁসির দণ্ড দিয়ে ২০০৮ সালের ২৮ জুলাই রায় দেয়। এরপর হাইকোর্টও তার সেই সাজা বহাল রেখে ২০১৩ সালে রায় দেয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করলে আপিল বিভাগে তার শুনানি হয়।

এ বিভাগের আরো খবর