রেজিস্ট্রেশনের এক দিনের মধ্যেই টিকা পাওয়ার তারিখ পেয়ে মেসেজ পাবেন বিদেশগামী বাংলাদেশিরা। টিকা নেয়ার জন্য কেন্দ্রে যেতে তারা এক দিন সময় পাবেন। তবে শুধু সৌদি আরব ও কুয়েতগামীদের ১৪০০ জনকে সাত কেন্দ্রে প্রতিদিন এই টিকা দেয়া হবে। তাদের কোভ্যাক্সের মাধ্যমে আনা মডার্নার টিকা দেয়া হবে।
অন্যান্য দেশে যারা যাবেন তাদের দেয়া হবে চীন থেকে আনা সিনোফার্ম উৎপাদিত টিকা।
সোমবার বিকেলে প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে অংশ নেন প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং জনশক্তি কর্মসংস্থান এবং প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালকসহ অন্য কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রবাসীরা যেন দুই ডোজ টিকা নিয়েই বিদেশে যান। তবে সৌদি আরবে কেবল এক ডোজ টিকা নিয়েই যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে এক ডোজ টিকা নিয়ে সৌদি সরকারের ঘোষিত অ্যাপে নিবন্ধন নিয়ে গেলে হোম কোয়ারেন্টিনই যথেষ্ট। নিবন্ধন না করে গেলে হোটেল কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, সরকার বিদেশগামী বা প্রবাসী কর্মীদের টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুরক্ষা অ্যাপে গিয়ে টিকার জন্য এ নিবন্ধন করতে হবে। তবে বিদেশগামী বা প্রবাসী পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য বিএমইটির নিবন্ধন লাগবে। মাত্র তিন ধাপে ঘরে বসেই ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমেই এটি করা যাবে।
গত চার দিনে এভাবে নিবন্ধন করেছেন প্রায় ২০ হাজার বিদেশগামী। নিবন্ধন শেষ করার প্রক্রিয়ায় আছেন আরও ১৫ হাজার জন।
বৈদেশিক কর্মসংস্থানসংক্রান্ত সেবা আরও সহজ ও ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ৮ মে এই অ্যাপটি চালু করে। এর উদ্বোধন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। বাংলা ট্র্যাক গ্রুপ অ্যাপটির কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে এবং বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর কাজটি করছে।
ঘরে বসে যে কেউ এতে নিবন্ধন করতে পারবেন। গুগলের প্লে স্টোর থেকে আমি প্রবাসী অ্যাপটি নামানো যাবে।
https://www. amprobashi.com/ ওয়েবসাইটে গিয়েও অ্যাপটিতে নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধন করতে হলে প্রথম ধাপে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে ‘আমি প্রবাসী’তে নিবন্ধন করতে হবে। দ্বিতীয় ধাপে নির্দেশনা অনুযায়ী পাসপোর্টটি স্ক্যান করতে হবে। এরপর পাসপোর্ট ডাটাবেজের ভেরিফিকেশনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
ওই মেসেজ এলেই তৃতীয় ধাপে বিএমইটির নিবন্ধনটি করা যাবে। মেসেজ আসতে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
বিএমইটির নিবন্ধন হয়ে গেলেই প্রবাসীরা করোনা ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য সুরক্ষা অ্যাপে গিয়ে টিকা নেয়ার রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। বিএমইটির নিবন্ধন করা থাকলে বয়স ৪০ বছর না হলেও প্রবাসী কর্মীরা সুরক্ষায় নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন।
এ ছাড়া বিএমইটি নিবন্ধন করা থাকলে সুরক্ষায় পাসপোর্ট নম্বর দেয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেটি যাচাই হয়ে যাবে। অ্যাপে নিবন্ধন হয়ে গেলে নির্ধারিত মোবাইল নম্বরে টিকা সেন্টার ও টিকা নেয়ার তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে। এরপর সেই টিকা কার্ড নিয়ে কেন্দ্রে যেতে হবে।
টিকা নিবন্ধনের জন্য সুরক্ষার পাশাপাশি ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপে নিবন্ধনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ জানান, দেশে পাসপোর্টধারী কোটি মানুষ আছেন। এদের মধ্যে কারা বিদেশে কাজ করতে যাচ্ছেন সেটি বিএমইটির নিবন্ধন ছাড়া নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এ কারণেই এই নিবন্ধন। ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই সেই কাজটি হচ্ছে।