বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গৃহকর্মীর নিরাপত্তায় সৌদি সহায়তা চাইলেন রাষ্ট্রদূত

  •    
  • ২৯ জুন, ২০২১ ২৩:১৩

সৌদি আরবে কর্মরত নারী গৃহকর্মীরা বিভিন্ন কারণে গৃহকর্তার বাসা থেকে পালিয়ে পুলিশের কাছে আশ্রয় গ্রহণ করতে আসে। রাষ্ট্রদূত গভর্নরের কাছে অনুরোধ জানান, পালিয়ে আসা এ সব নারী গৃহকর্মীদের ডিপোরটেশন সেন্টার অথবা সেইফ হাউজে জায়গা দিতে যেন পুলিশ সহায়তা করে।

সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মীদের নিরাপত্তায় দেশটির সরকারের সহায়তা চেয়েছেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।

মঙ্গলবার সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের গভর্নর প্রিন্স সউদ বিন নায়েফ আল সউদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ অনুরোধ জানান।

সৌদি আরবে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সৌদি আরবে কর্মরত নারী গৃহকর্মীরা বিভিন্ন কারণে গৃহকর্তার বাসা থেকে পালিয়ে পুলিশের কাছে আশ্রয় গ্রহণ করতে আসে। রাষ্ট্রদূত গভর্নরের কাছে অনুরোধ জানান, পালিয়ে আসা এ সব নারী গৃহকর্মীদের ডিপোরটেশন সেন্টার অথবা সেইফ হাউজে জায়গা দিতে যেন সহায়তা করে পুলিশ।

এ বিষয়ে যথাযথ সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন গভর্নর প্রিন্স সউদ বিন নায়েফ আল সউদ।

গভর্নরের সঙ্গে আলোচনায় রাষ্ট্রদূত পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের হাসপাতালের মর্গে যেসব অবৈধ অভিবাসীদের মরদেহ সংরক্ষিত রয়েছে তার ফি মওকুফের অনুরোধ জানান।

কেননা এসব মরদেহ দেশে পাঠানোর জন্য দূতাবাসের সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও হাসপাতালের ফির জন্য দেশে পাঠানো অথবা সৌদি আরবে দাফনের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয়।

রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘করোনাকালীন অনেক শ্রমিক সৌদি আরবে চাকরিচ্যুত হয়ে অবৈধ হয়ে পড়েছেন। এ সব অবৈধ অভিবাসীরা দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য ফাইনাল এক্সিটের আবেদন করেছেন, কিন্তু তাদের ফাইনাল এক্সিট প্রদান ধীর গতিতে হওয়ায় তারা দেশে যেতে পারছেননা। এ অবস্থায় তাঁদের জন্য সৌদি আরব থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।’

রাষ্ট্রদূত অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য গভর্নরকে অনুরোধ জানান।

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন উইংয়ের তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে শুধু সৌদি আরব থেকে ফিরেছেন ১০ থেকে ১২ হাজার নারী। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত আসা নারীদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছরে সমস্যার মধ্যে থাকা নারীদের মধ্যে ২ হাজার ৩৩৬ জন নারী আউটপাসের মাধ্যমে দেশে ফিরেছেন। ২০২০ সালে আউটপাস ও পাসপোর্ট নিয়ে ফিরেছেন ৫০ হাজার ৬১৪ জন নারী শ্রমিক।

ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, ‘নারীদের বিদেশে পাঠানো বন্ধ করা যাবে না। তবে যে নারীরা যাবেন এবং বিভিন্ন কারণে দেশে ফিরতে বাধ্য হবেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার নারীরা ওই দেশে থাকা অবস্থাতেই দূতাবাসের মাধ্যমে সন্তানের পিতৃত্ব নির্ণয়ে ডিএনএ টেস্ট করাতে হবে। অনেক সময় গৃহকর্মীর বাড়ির মালিক বা ছেলের পাশাপাশি বাড়িতে থাকা অন্য কেউ, বাংলাদেশি দালাল এমনকি দূতাবাসে কর্মরতদের বিরুদ্ধেও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া যায়। তাই অভিযুক্ত যেই হোক তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

বেসরকারি সংস্থা অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের চলতি বছরের এপ্রিল মাসে প্রকাশিত ‘অ্যাকসেস

টু জাস্টিস ফর বাংলাদেশি মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স: অপরচুনিটিজ অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক প্রতিবেদন বলছে, ফরিদপুর, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের ২৬২ জন ফেরত আসা নারী শ্রমিকের মধ্যে ৬০ শতাংশ বিভিন্ন রকম নির্যাতনের শিকার এবং এদের ১৬ শতাংশই বিদেশে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনা এতটাই অমানবিক যে সংসদেও নানা সময়ে দেশটিতে নারী শ্রমিক না পাঠানোর দাবি উঠেছে।

২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টি ও গণফোরামের সংসদ সদস্যরা দাবি করেন যে, গৃহস্থালি কাজের জন্য সৌদি আরবে নারী জনশক্তি পাঠানো বন্ধ করা উচিত। কেননা তারা প্রায়ই শারীরিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হন।

জবাবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সরকার খুবই চিন্তিত।’

ওইদিন সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ ও মুজিবুল হক চুন্নু এবং গণফোরামের সংসদ সদস্য সুলতান মনসুর আহমেদ আলাদাভাবে বিষয়টি তুলে ধরেন।

জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রশিক্ষণের পরে নারীকর্মীদের প্রেরণের পদক্ষেপ নেয়া হবে। যদি মনে হয় যে এটি পুরোপুরি অসম্ভব, তবে আমরা নারীকর্মীকে (সৌদি) না পাঠানোর চিন্তা করব।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকার সৌদি আরব দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গে সাক্ষাতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

তিনি জানান, সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, ওই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি তোলার জন্য।

এ বিভাগের আরো খবর