একজন আইনজীবীকে কম করে হলেও ১০ শতাংশ মামলা ফ্রি পরিচালনা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
আপিল বিভাগে মঙ্গলবার একটি মামলার শুনানির সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আইন পেশা একটি সেবামূলক পেশা। অসহায়, অসচ্ছলদের জন্য একজন আইনজীবীকে শতকরা ১০টি মামলা ফ্রি করে দেয়া উচিত।
মামলা পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রীয় খরচে নিয়োগকৃত আইনজীবীদের জন্য টাকার বরাদ্দ আরও বাড়ানো উচিত বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
আপিল বিভাগের মঙ্গলবার তালিকায় থাকা ৫ নম্বর মামলার আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত না থাকায় এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
মামলাটির ‘অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড’ হিসেবে আছেন আইনজীবী নুরুল ইসলাম চৌধুরী। কিন্তু তিনি শুনানির সময় উপস্থিত ছিলেন না। পরে আদালতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ওই মামলাটি শুনানির জন্য সময় প্রার্থনা করেন নুরুল ইসলাম।
এ সময় আপিল বিভাগ বলে, ‘অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড হবেন আর শুনানির সময় উপস্থিত থাকবেন না, তা কেমনে হয়। এটি কী ছেলে খেলা পেয়েছেন। আপনাদের জন্য কী আপিল বিভাগ বসে থাকবে’
আদালত বলে, ‘কেউ না থাকলে স্টেট ডিফেন্স (রাষ্ট্রীয় খরচে) আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে মামলা শেষ করে দেবো।’
প্রধান বিচারতি বলেন, স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীদের টাকা বাড়ানো উচিত।
তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, ‘জি মাই লর্ড, ওই পয়সায় ভালো আইনজীবী আসতে চান না।’
সরকারের দেয়া বরাদ্দ টাকা ওঠানোও কষ্টদায়ক বলে মন্তব্য করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুনসুরুল হক।
তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনজীবীদের উচিত ১০ শতাংশ মামলা ফ্রি করা। এটা অবশ্যই পালনীয় দায়িত্ব।
এ সময় আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারক বিচারপতি ইমান আলী বলেন, দেশের বাইরে তো নতুন করে আইনজীবীদের রিনিউ করতে হয়। সেখানে তখন ব্যাখ্যা দিতে হয় কয়টা মামলা প্রো বোনো (জনস্বার্থে) করেছেন। তা না হলে লাইসেন্স রিনিউ করতে দেয় না।
তখন আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের এখানে এটা হলে তো ভালোই হয়। আমরাও চাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা করা যায়।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, আগে তো আইনজীবীরা টাকাও চাইতো না। গাউনের পেছনে পকেট ছিল। যা দিত ওই পকেটেই দিয়ে দিত।