মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে অনন্যসাধারণ ভূমিকা রাখা আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জেয়াদ আল মালুমকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, সিপিবি কার্যালয় ও শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর তার দাফন হবে।
পরিবার জানিয়েছে, দাফনের আগে তার আগে মরদেহ বেলা ১২টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাখা হবে। বেলা সাড়ে ১২টায় সিপিবি কার্যালয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নেয়া হবে। দুপুর দেড়টায় হাইকোর্ট প্রাঙ্গনে জানাজা শেষে দুপুর আড়াইটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হবে।
সেখানে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এ দিকে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুমের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
জেয়াদ আল মালুম গত ২৫ মে রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে গত ২ জুন তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়।
এরপর অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। শনিবার রাত পৌনে ১টায় সিএমএইচে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হয়।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য মালুম প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান। সেই থেকে তিনি দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
তিনি জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযম ও মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজনের বিচারে রাষ্ট্রপক্ষে জোরাল বক্তব্য রাখেন।
জেয়াদ আল মালুমের জন্ম টাঙ্গাইল জেলার সদর থানার করোটিয়া গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ঢাবিতে পড়াকালীন ছাত্র ইউনিয়নের সহসভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন।
পরে তিনি বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জেয়াদ আল মালুম ছাত্রজীবন শেষে ১৯৮৩ সালে ঢাকা জজ কোর্টে আইনজীবী হিসেবে পেশা শুরু করেন। তিনি ১৯৮৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য পদ পান।
এরপর ১৯৯৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।