বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আসছে শাটডাউন কেমন হবে?

  •    
  • ২৫ জুন, ২০২১ ১৬:২০

শাটডাউনে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ রাখা হবে কি না জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো আমাদের চিন্তা-ভাবনার মধ্যে আছে। যাতে অফিস-আদালত বন্ধ থাকে কিছুদিনের জন্য। এরকম একটি চিন্তা বা পরিকল্পনা আমাদের আছে। যাতে করে আমরা সার্বিকভাবে, সর্বাত্মকভাবে গতিবিধিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। সকলেই যাতে আমরা ঘরে থাকতে পারি।’

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের তীব্র সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরে ঈদুল আজহার আগে 'স্বস্তিকর পরিবেশ’ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত ‘শাটডাউন’ ঘোষণা করতে চায় সরকার। শাটডাউনে বন্ধ থাকবে সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের অফিস; বন্ধ থাকবে দোকানপাট। মানুষের চলাফেরায় থাকবে কঠিন বিধিনিষেধ।

এ বিষয়ে নিউজবাংলাকে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমাদের সংক্রমণ (করোনাভাইরাস) অনেক বেশি, তাই যত দ্রুত সম্ভব এটি (শাটডাউন) আমাদের দিতে হবে। সামনে আবার ঈদ আছে। আমরা চাই যে ঈদের সময় যেন একটা স্বস্তিকর পরিবেশ থাকে।’

কবে নাগাদ শাটডাউনের ঘোষণা আসতে পারে সেটি নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু বলতে চাননি জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। জানালেন, শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু উচ্চ সংক্রমণ, সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাপকভাবে। সকলেই কিন্তু এ বিষয়ে অবহিত। এখন একটা কঠোর বিধিনিষেধ আমাদের প্রয়োজন, ঢাকাসহ দেশব্যাপী। সেটি আমরা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করব, কীভাবে কী করা যায়। কবে নাগাদ বলতে, যত দ্রুত করা যায় সে বিষয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা আছে।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রচেষ্টার কোনো কমতি নেই জানিয়ে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘যেখানে তীব্র সংক্রমণ সেখানে আমরা স্থানীয়ভাবে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছি। ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলোতেও আমরা সম্প্রতি দিলাম। প্রতিদিনই দেখছি সংক্রমণ বাড়ছে। গতকাল (বৃহস্পতি) ৬ হাজার ৫৮ জন সংক্রমিত হয়েছে। এটা কিন্তু আশঙ্কাজনক। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ সেটি (শাটডাউন) যত দ্রুত দেয়া যায়।

‘সামনে কোরবানির ঈদ আছে, ঈদের আগে যাতে আমরা একটা স্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি করতে পারি। যাতে সংক্রমণটা কমে যায়। তাই যত দ্রুত সম্ভব এটা দেয়া যায়, আমরা সেটা চিন্তা ভাবনা করছি।’

ফরহাদ হোসেন জানালেন, জাতীয় সংসদে চলছে বাজেট অধিবেশন। ২০২১-২২ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত পাস হওয়ার বিষয় আছে। জুনের অবশিষ্ট দিনগুলোর মধ্যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা কিছুটা কঠিন। এসব প্রতিবন্ধকতা থাকলেও সরকার দ্রুত শাটডাউন দিতে চায়।

তিনি বলেন, ‘বাজেট অধিবেশন জরুরি সেবার মধ্যেই থাকবে। আমাদের করোনা সংক্রমণ যদি রোধ করতে হয়, সেটা তো সময় মানবে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে করতে হবে। অপেক্ষা করলে তো আরও বেড়ে যাবে।’

কেমন হবে শাটডাউন?

শাটডাউনের রূপ কেমন হবে জানতে চাওয়া হয় প্রতিমন্ত্রীর কাছে। ইঙ্গিত দিলেন, ২০২০ সালের মার্চে শুরু হওয়া অঘোষিত লকডাউনের অবস্থা বিরাজ করবে দেশজুড়ে।

তিনি বলেন, ‘আমরা চাইব সেরকমভাবে, যাতে প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে বাইরে আসতে না হয়, সে বিষয়টি মাথায় নিয়ে আমরা করতে চাই। সে ধরনের চিন্তাভাবনা আমাদের আছে।’

সরকারি, বেসরকারি অফিস-আদালত বন্ধ রাখার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো আমাদের চিন্তা-ভাবনার মধ্যে আছে। যাতে অফিস-আদালত বন্ধ থাকে কিছুদিনের জন্য। এরকম একটি চিন্তা বা পরিকল্পনা আমাদের আছে। যাতে করে আমরা সার্বিকভাবে, সর্বাত্মকভাবে গতিবিধিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। সকলেই যাতে আমরা ঘরে থাকতে পারি।’

সরকারের এমন পরিকল্পনার সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেভাবে বেড়ে (করোনা সংক্রমণ) যাচ্ছে আমরা যদি এই মুহুর্তে এটার রাশ টেনে না ধরি, তাহলে এটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি আছে।’

শ্রমজীবীদের জন্য থাকছে সুবিধা

শাটটডাউনে সব শ্রেণীর মানুষকে ঘরে রাখতে চায় সরকার। প্রয়োজনে শ্রমজীবী মানুষদের সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘যখন অফিস-আদালতে আসার প্রয়োজন হবে না তখন সে ঘরে থাকবে। এবং যারা যারা বাইরে আসছেন নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের জন্য আমাদের কিছু সহযোগিতা, খাবারের সহযোগিতা আছে।’

শ্রমজীবী মানুষদের নিয়ে সরকারের ভাবনার কথাটাও জানালেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলাভিত্তিক, ইউনিয়নভিত্তিক পরিকল্পনা সরকারের নেয়া আছে। ফলে এই কয়দিনের জন্য যারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, চায়ের দোকানদার বা ছোটখাটো হোটেলগুলো আছে সেগুলোর বিষয়ে আমাদের চিন্তা ভাবনা থাকবে। কিংবা সেলুনকর্মী- এ ধরনের যারা দিন এনে দিনে খায় এরকম যারা আছেন তাদের জন্য আমরা আগেও যেভাবে করেছিলাম, সেভাবে সেটা করতে পারব।’

করোনাভাইরাসের লাগাম টানতে সবার সহযোগিতা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী। বলেন, ‘যেহেতু সংক্রমণ ঊর্ধ্বগামী, যদি চেইনটাকে আমরা ভাঙতে চাই, সেটির গতিকে যদি রোধ করতে চাই, তাহলে আমাদের সকলকে সহযোগিতা করতে হবে। আগামী কিছুদিন আমাদের বিধিনিষেধ গুলো মেনে চলতে হবে।’

বিধি-নিষেধ, লকডাউন নাকি শাটডাউন?

‘বিধি-নিষেধ’, ‘লকডাউন’, ‘শাটডাউন’- নানা সময়ে নানা কথা বলা হচ্ছে। এটা নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তি মানুষের মাঝে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হয় প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের কাছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের সবকিছু বিবেচনা করে আমরা আমাদের মতন করে কিন্তু করি। কারণ ইউরোপের মতো এটি লকডাউন নয় বা অন্য দেশের মতন অন্য কিছু নয়, আমরা বিধিনিষেধ বলছি। কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছি।’

লকডাউন বা শাটডাউন না বলে কঠোর বিধিনিষেধ বলার পক্ষে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের মত করে আমরা করি। আমাদের জনসংখ্যা, আমাদের ছোট আয়তনের দেশ, আর্থসামাজিক পরিস্থিতি, জীবন জীবিকা অনেক কিছুই আমাদের চিন্তা ভাবনায় আনতে হয়। তাই আমাদের মতন করেই হবে। আমাদের মত করে বললে হয় যে, কঠোর বিধিনিষেধ। কঠোর বিধিনিষেধ বললেই ভাল হয়।’

এ বিভাগের আরো খবর