লেখক ও কবি ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলায় আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের তারিখ ধার্য করেছে আদালত। ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মাকছুদা পারভীন বৃহস্পতিবার এ তারিখ ধার্য করেন।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সাইফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আদালতে এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আদালতে ফের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরই ফলে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নতুন তারিখ ধার্য করেছে আদালত।
হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম চলাকালে গত ১৮ জানুয়ারি চার আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দাবি করে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর শুরু হয় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন, যা অব্যাহত রয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি একুশে গ্রন্থমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে হামলার শিকার হন ড. হুমায়ুন আজাদ। তাকে চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। হামলার পর হুমায়ুন আজাদ ২২ দিন সিএমএইচে ও ৪৮ দিন ব্যাংককে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে জার্মানির মিউনিখে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই বছরের ১২ আগস্ট তিনি মারা যান।
হামলার ঘটনায় পরদিন হুমায়ুন আজাদের ছোট ভাই মঞ্জুর কবির বাদী হয়ে রমনা থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। পরে তা হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়। এ ছাড়া একই ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনেও মামলা হয়।
মামলার বাদী মো. মঞ্জুর কবির ২০০৯ সালের ৬ অক্টোবর মামলাটির বর্ধিত তদন্তের আবেদন করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেয়।
আলোচিত মামলাটি বিভিন্ন সময় তদন্ত করেছেন রমনা থানার উপপরিদর্শক মাহবুবুর রহমান, সিআইডির ইন্সপেক্টর কাজী আব্দুল মালেক, মোস্তাফিজুর রহমান ও লুৎফর রহমান।
হত্যা মামলাটিতে ২০১০ সালের ১৮ অক্টোবর আসামি আনোয়ার আলম ওরফে ভাগনে শহিদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ মামলায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে পাঁচ দফায় বিভিন্ন মেয়াদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তবে শেষ পর্যন্ত এ মামলার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল ওই মামলার তদন্ত শেষে সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ওই পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ গঠন করে আদালত।
এর আগে ২০০৭ সালের ১১ নভেম্বর মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে একটি চার্জশিট দাখিল করেন। সেই চার্জশিটে আবু আব্বাস ভূঁইয়া ও গোলাম মোস্তফা নামের দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়।
মামলাটির চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন জেএমবির শুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শাওন, আনোয়ার আলম, হাফিজ মাহমুদ, সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন ও নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু। তাদের মধ্যে সালেহীন ও সাবু পলাতক। আসামি হাফিজ মাহমুদ মারা গেছেন।