১১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিমানের সেলস মার্কেটিং বিভাগের পরিচালক আশরাফুল আলম, কার্গোর জিএম আরিফ উল্লাহসহ ১০ জনের বিদেশযাত্রায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এর আগে এ বিষয়ে আদালতের অনুমতি নেয় দুদক।
নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বিমানের কার্গো শাখার সাবেক মহাব্যবস্থাপক আলী আহসান, ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক আরিফ উল্লাহ, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয়) শামসুল করিম, জেলা ব্যবস্থাপক নীলফামারীর মুহাম্মদ আসলাম পারভেজ, কমার্শিয়াল সুপারভাইজার প্রমিতোষ তালুকদার, কমার্শিয়াল অফিসার রিয়াদ সোলেমান, কমার্শিয়াল সুপারভাইজার কক্সবাজার জিয়া উদ্দীন খান ঠাকুর, পরিচালক সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং আশরাফুল আলম, যুক্তরাজ্যের সাবেক কান্ট্রি ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম ও সিলেটের জেলা ব্যবস্থাপক এনায়েত হোসেন।
২০১৯ সালের ৩ ডিসেম্বর তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদকের উপপরিচালক আতাউর রহমান।
২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি এই মামলায় বাংলাদেশ বিমানের সাবেক ও বর্তমান ১০ কর্মকর্তা জামিন পান।
এদিকে গত ২২ জুন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মুনীম মোসাদ্দিক আহম্মেদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
২০১৯ সালের ২৪ জুলাই ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ঘুষ নিয়ে ক্যাডেট পাইলট নিয়োগসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে মোসাদ্দিক আহম্মেদকে তলব করে দুদক। অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিতে তাকে ৩০ জুলাই দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়।
প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়ায় তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মঙ্গলবার আদালতে আবেদন করেছিল দুদক।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্ন আদালত তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়ার অনুমতি দেয়।
সংস্থাটির পরিচালক (ক্যাসিনো-সংক্রান্ত অনুসন্ধান টিমের প্রধান) সৈয়দ ইকবাল হোসেন নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবালের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি টিম অনুসন্ধান ও তদন্তের দায়িত্ব পালন করছে।
টিমের অপর সদস্যরা হলেন দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, মো. সালাহউদ্দিন, গুলশান আনোয়ার প্রধান, সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম, আতাউর রহমান ও নেয়ামুল আহসান গাজী।
সাবেক এমডির বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বিমানের সে সময়ের ভারপ্রাপ্ত এমডি ক্যাপ্টেন ফারহাত হাসান জামিলকেও তলব করা হয়।
তাকে ২৯ জুলাই দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে। একই দিন হাজির হতে বলা হয় বিমানের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার বিনীত সুধ, পরিচালক (মার্কেটিং ও সেলস) আশরাফুল আলম, পরিচালক (প্ল্যানিং) মাহবুব জামান খান ও চিফ অব ট্রেইনিং ফজল মাহমুদ চৌধুরীকে।
এছাড়া ওই দিন তলব করা হয় বিমানের পরিচালক (প্রশাসন) পার্থ কুমার পণ্ডিত, পরিচালক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট) সাজ্জাদুর রহিম, পরিচালক (কাস্টমার সার্ভিস) মমিনুল ইসলাম ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) বুশরা ইসলামকে।
এ বছরের ২ মে বিমানের ১০ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বরাবর চিঠি পাঠায় দুদক। এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) এবং শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ওসি (ইমিগ্রেশন) বরাবর চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়।
মোসাদ্দিক আহম্মেদ ছাড়াও জুনিয়র গ্রাউন্ড সার্ভিস অফিসার-বিমান শ্রমিক লীগের সভাপতি ও বিমানের সিবিএ নেতা মশিকুর রহমান, গ্রাউন্ড সার্ভিস সুপারভাইজার জি এম জাকির হোসেন, মিজানুর রহমান ও এ কে এম মাসুম বিল্লাহ, কমার্শিয়াল সুপারভাইজার রফিকুল আলম ও গোলাম কায়সার আহমেদ, জুনিয়র কমার্শিয়াল অফিসার মারুফ মেহেদী হাসান এবং কমার্শিয়াল অফিসার জাওয়েদ তারিক খান ও মাহফুজুল করিম সিদ্দিকীর ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
হাইকোর্টের সাম্প্রতিক এক নির্দেশনার কারণে দেশত্যাগে বা বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার জন্য বিচারিক আদালতের অনুমতি নিতে হচ্ছে দুদককে।